নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আর মাত্র ৮ দিন বাকি। তবে যশোরে মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৬৮ শতাংশ পাঠ্যবই এখনো জেলা শিক্ষা অফিসে পৌঁছায়নি। এ কারণে শিক্ষাবর্ষের শুরুতে মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থী সব পাঠ্যবই হাতে পাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই নিয়ে সংকট বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই নিয়ে কোনো সংকট নেই। যশোরে চাহিদার শতভাগ বই পেয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। বছরের শুরুতেই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা সব পাঠ্যবই পাবে।

যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য চাহিদার শতভাগ বই ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে। যশোরে এ বছর ১২ লাখ ৮২ হাজার ৭২৫টি বাইয়ের চাহিদা ছিল। সকল উপজেলা শিক্ষা অফিসে বই পাঠানো হয়েছে এবং সেখান থেকে স্কুলগুলোতে বই বিতরণ করা হচ্ছে। প্রাথমিকে বইয়ের সরবরাহ সন্তোষজনক হওয়ায় শিক্ষকরা বই উৎসব নিয়ে স্বস্তিতে রয়েছেন। 

তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে মাধ্যমিক স্তরে। জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, মাধ্যমিকের (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি) চাহিদার তুলনায় এখন পর্যন্ত ৩১.৯০ শতাংশ বই জেলায় এসেছে। এ বছর যশোরে ৩৫ লাখ ১৪ হাজার ৪০৩টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২০ হাজার ৯৪১টি বই এসেছে। অনেক শ্রেণির প্রধান বিষয়গুলোর বই এখনো ছাপাখানা থেকে এসে পৌঁছায়নি। ফলে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীরা সব বই হাতে পাবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

যশোর সদরের চান্দুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেখা রানী রায় চৌধুরী তার স্কুলে চাহিদা মোতাবেক সব পেয়েছেন বলে জানিয়েছে। বছরের প্রথম দিনেই বই তুলে দিতে পারব।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যশোরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রাথমিক স্তরের বইগুলো দ্রুত আসলেও আমাদের জন্য এখনো সব বই বরাদ্দ আসেনি। ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, কিন্তু পর্যাপ্ত বই না পেলে উৎসবের আনন্দ ম্লান হয়ে যেতে পারে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, বছর শুরুর আগেই আমরা চাহিদার শতভাগ বই পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বই প্রদান করেছি। প্রাইভেট স্কুলের বই গুলোও ধীরে ধীরে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে যশোর জেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেন বলেন, মাধ্যমিকের সব বই এখনো আসেনি এটা ঠিক, তবে প্রতিদিনই নতুন নতুন বইয়ের ট্রাক আসছে। আমরা আশা করছি উৎসবের আগেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বই চলে আসবে। যেসব বই বাকি থাকবে, সেগুলো দ্রুত সরবরাহের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, যশোর জেলায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে।

রেজওয়ান বাপ্পী/আরকে