শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, দীপু চন্দ্র দাসের হত্যাকাণ্ড একটি নৃশংস অপরাধ।  এটি কোনো অজুহাত রাখে না। বাংলাদেশ একটি আইন শাসিত রাষ্ট্র। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার রাখে না। অন্যায় হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মোকামিয়াকান্দা গ্রামে নিহত দীপু চন্দ্র দাসের বাড়িতে সহমর্মিতা জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় নিহত দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারের সাথে সরকার আছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দীপু চন্দ্র দাসের পরিবার একা নয়, সরকার তার পরিবারের সাথে আছে, এটা জানাতেই আমি এখানে এসেছি। দীপুর পরিবারের এমন সংকটকালে আমরা তাদের পাশে আছি। তার স্ত্রী সন্তান ও পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের আথির্ক ও আইনগত সহায়তসহ সব ধরনের সহায়তা করবে। আমি এটা নিশ্চিত করতে চাই, দীপুর সন্তান ও তার স্ত্রীর সম্পূর্ণ ব‍্যয় সরকার বহন করবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে এবং তা রাষ্ট্র যথাযথ সম্মান করে। গুজব বা বিশ্বাসগত পার্থক্য এ ধরনের বর্বরতার অজুহাত হতে পারে না। সরকার সর্বোচ্চ আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে। ইতিমধ্যে দীপু হত্যাকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। এর সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং দোষিদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে কিছু দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠী বিভাজন ও মতভেদ সৃষ্টি করে এসব উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের সকলকে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং এগুলো হতে দেওয়া যাবে না। এসব নৃশংস কর্মকাণ্ড হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্ব্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে।

এসব ঘটনায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব কর্মকাণ্ডে নির্বাচনে কোনোভাবেই প্রভাব পড়বে না এবং বাইরের দেশের উস্কানিতেও নির্বাচনে কোনো প্রভাবে পড়বে না। 

এ সময় জেলা প্রশাসনসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দীপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তার মরদেহ বিবস্ত্র করে গাছে ঝুলিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী এখন পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

নিহত দীপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি দুই বছর ধরে ভালুকার জামিরদিয়া পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।

আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর