কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান ও তার ভাইদের বাড়িসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাহারা দেওয়া যুবদল নেতা ফারুক হোসেন ব্যাপারীর পদ স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইঞার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। ফারুক মাদারীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক পদে ছিলেন। এর আগে গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) তাকে ৩ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছিল।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাদারীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফারুক হোসেন ব্যাপারীর প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হলো। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

স্থানীয় নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, ওসমান হাদীকে হত্যার প্রতিবাদে গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গ্রুপে আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খানের বাড়ি ও তার ভাইদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ঘেরাও করার কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পরে মাদারীপুর শহরের চাঁনমারি মসজিদের সামনে শাজাহান খানের আলিশান দশ তলা ভবনসহ তার ভাইদের চারটি বাড়ি, আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও পেট্রোল পাম্পে কোন ধরণের সহিংসতা যেন না হয় তার জন্য যুবদলের আহ্বায়ক ফারুকের নেতৃত্বে তার অন্তত অর্ধশত কর্মীরা শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাহারা দেন। তাদের এ কার্যক্রমের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাটি গত রোববার কেন্দ্রীয় যুবদলের নজরে এলে তাৎক্ষণিক ফারুককে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়। সেই নোটিশে ৩ দিনের মধ্যে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়নের সামনে উপস্থিত হয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এরপর ব্যাখ্যা শুনে সোমবার রাতে তার সকল পদ স্থগিত করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া।

এদিকে শাজাহান খান ও তার ছেলে আসিবুর রহমান আসিব খান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তার ভাইয়েরাসহ পরিবারের অধিকাংশ লোক পলাতক থাকলেও মাদারীপুরে তাদের পরিবহন, আবাসিক হোটেল, পেট্রোল পাম্পসহ সব ধরণের ব্যবসাবানিজ্য সচল রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফারুক হোসেন ব্যাপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে অভিযোগ দিয়েছে সেন্টু খান। নতুন বাসস্ট্যান্ড ও তেলপাম্পের থেকে ৩/৪ কিলোমিটার দূরে শাজাহান খানের বাড়ি, সেখানেতো আমাদের কোন লোক যায়ই নাই। পাহারা দিলো কিভাবে? আর আমার নামে নাকি ৪ টা বাড়ি লেইখা দিছে যাচ্চু খান। আমি সেই ৪ টা বাড়ি নাকি দখল কইরা খাই। কিন্তু আমিতো যাচ্চু খানের বাড়িই চিনি না। সেন্টু খান এই বানোয়াট কাজগুলা করছে।”

এসময় পদ স্থগিতের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “আমার পদ স্থগিত করছে কিনা আমি এখনো নিশ্চিত না। তবে স্থগিত আদেশ হয়তো দুই চারদিন থাকতে পারে। নোটিশ অনুযায়ী সশরীরে পার্টি অফিসে গিয়ে কথা বলেছি। এখন ঢাকায়ই আছি। ফোন করে স্থগিত করছে কিনা জানতে হবে।”

 

আকাশ আহম্মেদ সোহেল/এসএমডব্লিউ