নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জাল ছাড়াই ধরা পড়েছে ২৩ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ। মাছটি স্থানীয় বাজারে নিলামের মাধ্যমে ১৭ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের হরিক্ষিত বাজার-সংলগ্ন মেঘনা নদীতে মাছটি পাওয়া যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুড়িরচর ইউনিয়নের বড়দেইল ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আব্দুল গনির ছোট ছেলে জেলে আনোয়ার হোসেন নদীতে জাল ফেলতে গিয়ে তীরে কাদার মধ্যে কোরাল মাছটি দেখতে পান। পরে বড় ভাইয়ের সহায়তায় মাছটি স্থানীয় বাজারে নিয়ে আসা হলে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। পরে নিলামে কেজিপ্রতি ৭৫০ টাকা দরে মোট ১৭ হাজার ২৫০ টাকায় এক মাছ ব্যবসায়ীর কাছে এটি বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেঘনা নদীতে অতীতে বড় আকারের মাছ পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা অনেক কমে গেছে। কোরাল মাছের চাহিদা ও দাম অনেক বেশি। সেই হিসেবে মাছটি আরও বেশি দামে বিক্রি হতে পারত। তবে জাল ছাড়াই এমন বড় মাছ পাওয়াকে সবাই সৌভাগ্যের বিষয় হিসেবে দেখছেন।

জেলে আনোয়ার হোসেন আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, আমরা প্রতিদিনই জীবিকার তাগিদে নদীতে যাই। অনেক সময় সারাদিন জাল ফেলেও কিছুই পাওয়া যায় না। অভাবের এই সময়ে কোনো জাল ছাড়াই নদীর তীরে ভাসতে থাকা এত বড় মাছ পাওয়া নিঃসন্দেহে আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিরাট নেয়ামত। আল্লাহ যা দেন, তা সময়মতোই দেন—আজকের ঘটনাই তার প্রমাণ।

আনোয়ারের বড় ভাই সিরাজ বলেন, হঠাৎ এত বড় কোরাল পাওয়াটা আমাদের জন্য অকল্পনীয় ছিল। মাছটি বাজারে নিয়ে আসার পর আশপাশের মানুষজন ভিড় করে দেখতে আসেন এবং ছবি ও ভিডিও তোলেন। পরিবারের সবাই এই ঘটনায় খুবই আনন্দিত।

এ বিষয়ে হাতিয়ার মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. ফয়জুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেঘনা নদী সামুদ্রিক ও আধা-সামুদ্রিক মাছের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন ক্ষেত্র। মাঝে মাঝে প্রাকৃতিক কারণে বড় আকৃতির কোরাল মাছ নদীর তীরে ভেসে উঠতে পারে। বর্তমানে বাজারে কোরাল মাছের দর তুলনামূলক বেশি। এ ধরনের মাছ পাওয়া নদীর জীববৈচিত্র্যের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত।

হাসিব আল আমিন/এএমকে