কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫০টি ঘর, যার মধ্যে অন্তত ৩৫টি ঘর পুরোপুরি পুড়ে গেছে।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৯টা ৫০-এর দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদার ২৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকে আগুনের সূত্রপাত হয় যা পার্শ্ববর্তী আলীখালী ২৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি ব্লকেও ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ও স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

টেকনাফ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা জামিন মিয়া বলেন, অগ্নিকাণ্ডে অন্তত অর্ধশতাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কি কারণে আগুন লেগেছে তা এখনো জানা যায়নি, তবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

২৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত জানিয়ে লেদা ক্যাম্প ডেভেলপমেন্ট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলম বলেন, ক্যাম্পের বাসিন্দা ফাতেমার ঘর থেকে আগুন লাগে বলে জেনেছি প্রাথমিকভাবে। পড়ে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়লে নির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসসহ আমরা কাজ করি।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকের বাসিন্দা রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ আমিন বলেন, হঠাৎ করে আগুন জ্বলে উঠলে পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে আসি। আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় ক্যাম্পের বাসিন্দারা আতঙ্কে আছে।

আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে বাস্তুচ্যুত হয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা পরিবারগুলো। পুড়ে যাওয়া একটি ঘরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, প্রচণ্ড শীতে জানি না কিভাবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাত কাটাব। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চিন্তায় আছি। কোনো রকম প্রাণে বেঁচেছি।

ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ কাউছার সিকদার বলেন, অগ্নিকাণ্ডে এপিবিএন সদস্যরা উদ্ধার কাজে সহায়তা করেছে। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

শীতের মৌসুমে আকস্মিক বারবার এমন আগুনের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এর আগে, গত ২৬ ডিসেম্বর ভোরে উখিয়ার ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অগ্নিকাণ্ডে একটি হাসপাতাল সম্পূর্ণ পুড়ে যায় এবং ২৫ ডিসেম্বর রাতে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আনুমানিক ১০টি ঘর।

গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং ১ ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক ঘর পুড়ে যায়, নিহত হয় একজন।

ইফতিয়াজ নুর নিশান/এএমকে