খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানাতে ঢাকার পথে বগুড়ার হাজারো নেতাকর্মী
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে তার স্মৃতিবিজড়িত জেলা বগুড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রিয় নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে ও জানাজায় অংশ নিতে বগুড়া জেলাজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এরই মধ্যে হাজারো নেতাকর্মী বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শহরের নওয়াববাড়ি রোডে অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক শোক পালন শুরু হয়। সেখানে একটি শোকবই খোলা হয়েছে। যেখানে সকাল থেকেই সর্বস্তরের মানুষ স্বাক্ষর করছেন। শোকের প্রতীক হিসেবে নেতাকর্মীদের বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করতে দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
জেলা বিএনপি সূত্র জানায়, আগামীকাল বুধবার ঢাকায় বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবে। জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য বগুড়ার সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা বাস, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছেন।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু আমাদের রাজনৈতিক নেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন অভিভাবক ও মায়ের মতো। বগুড়ার মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল আত্মিক। তার মৃত্যুতে আমরা সত্যিকার অর্থেই আজ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় মঙ্গলবার বাদ জোহর শহরের বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাবেক সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনা, জয়নাল আবেদীন চান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
অন্যদিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি ও আশপাশের এলাকায় শোকের আবহ বিরাজ করছে। ১৯৬০ সালে পুত্রবধূ হিসেবে বাগবাড়িতে আগমনের পর থেকেই স্থানীয়দের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন আদরের ‘ব্যাটার বউ’। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর তার দৃঢ় নেতৃত্বে বিএনপিকে সংগঠিত করা এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তার আপসহীন ভূমিকা বগুড়াবাসীর কাছে আজও গর্বের স্মৃতি।
বগুড়ার সংসদীয় রাজনীতির সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার সম্পর্ক ছিল গভীর ও অবিচ্ছেদ্য। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই জেলার বিভিন্ন আসন থেকে প্রতিবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। প্রিয় এই নেত্রীর ইন্তেকালে গাবতলীর বাগবাড়িসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল এবং এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
আব্দুল মোমিন/আরএআর