নারায়ণগঞ্জের ১৫ কিলোমিটার রাস্তায় তীব্র যানজট, ভোগান্তি চরমে
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে যান চলাচল বন্ধ ও ধীরগতির কারণে যাত্রী, শ্রমজীবী মানুষ, পণ্যবাহী যানচালক ও পরিবহন শ্রমিকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদন লেখার সময়েও মহাসড়কে তীব্র যানজট বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র ও হাইওয়ে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ২টার দিকে মদনপুর ও নাঙ্গলবন্দ এলাকায় পৃথক দুটি স্থানে দুটি ওভারলোড ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে। ট্রাক দুটি মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ লেনে দাঁড়িয়ে থাকায় চট্টগ্রামমুখী লেনে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। একপর্যায়ে ধীরে ধীরে যানজট ছড়িয়ে পড়ে সাইনবোর্ড, কাঁচপুর ও শিমরাইল এলাকা অতিক্রম করে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জুলহাস উদ্দিন জানান, রাত ২টার দিকে মদনপুর ও নাঙ্গলবন্দ এলাকায় দুটি ওভারলোড ট্রাক বিকল হয়ে যায়। ট্রাক দুটি দ্রুত সড়ক থেকে সরানো সম্ভব না হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। পাশাপাশি মেঘনা গ্রুপের বাৎসরিক অফারের কারণে সারাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়ি এ সড়কে প্রবেশ করায় যানজটের চাপ আরও বেড়ে যায় এবং টেইল তৈরি হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
তিনি আরও জানান, খবর পাওয়ার পরপরই হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিকল ট্রাক সরাতে কাজ শুরু করে। তবে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ এবং সড়ক সরু হওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রমে বেশি সময় লেগে যায়।
বিজ্ঞাপন
ভোর রাত থেকেই যানজটে আটকে পড়া যাত্রীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা যায়। বাসযাত্রীরা জানান, কয়েক কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। অনেক অফিসগামী যাত্রী সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। পাশাপাশি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি সেবার গাড়িগুলোও দীর্ঘ সময় আটকে থাকে।
বেলায়েত হোসেন নামে এক বাসযাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৩ ঘণ্টা ধরে গাড়িতে বসে আছি। কখন যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব বুঝতে পারছি না। এই সড়কে প্রায়ই এমন অবস্থা তৈরি হয়, কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান নেই।
দুপুর হওয়ার পরও যানজট পুরোপুরি নিরসন না হওয়ায় মহাসড়কে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যায়। অনেক চালক বিকল্প সড়ক ব্যবহারের চেষ্টা করলেও সেসব সড়কেও যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বিকল ট্রাকগুলো সরানোর পর ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকায় পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।
মেহেদী হাসান সৈকত/এআরবি