‘অন্ধ ভূমিগর্ভ হতে শুনেছিলে সূর্যের আহ্বান/ প্রাণের প্রথম জাগরণে, তুমি বৃক্ষ, আদিপ্রাণ’―বরীন্দ্রনাথের ‘বৃক্ষবন্দনা’ কবিতায় কবি গাছকে মাটির বীর সন্তান বলে বন্দনা করেছেন। একটি গাছ লাগানো হলে এটি অনেকটা জায়গাজুড়ে প্রকাণ্ড হয়ে ওঠে। শাখা-প্রশাখা মেলে। সেই গাছ যেমন মানুষকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে, তেমনি পরিবেশকে করে সমৃদ্ধ। তবু গাছ মাঝেমধ্যে নাগরিক সুবিধার বলি হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার বাসাইলে।

প্রায় ১৫ বছর আগে গাছটি লাগানো হয়েছে। এটি যেমন বাড়িয়েছে স্থানীয় বাজারের সৌন্দর্য, তেমনি সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে এখানকার পরিবেশকে। কিন্তু গাছটির জন্য প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে এখানকার যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে।

বর্তমানে বাসাইল বাজার থেকে সতুরচর, পাথরঘাটা, গুয়াখোলা, রাঙ্গামালিয়া, ইমামগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ও বাজারে যোগাযোগের নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হলেও এই কড়ইগাছকে রাস্তার মধ্যবর্তী স্থানে রেখে রাস্তা নির্মাণকাজ শেষ করেছে। এতে মাঝখানে পড়েছে গাছটি।

এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এর সত্যতা পাই। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। অনুমতি পেলে কাটার ব্যবস্থা করা হবে।

আবদুল লতিফ, উপজেলা বন কর্মকর্তা

স্থানীয়রা জানান, এই গাছের কারণে রাস্তাটি দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। যাত্রী ও মালামালসহ বিভিন্ন যানবাহনকে প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। ফলে এলাকার লোকজনের একটু বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন বেশি ভাড়া গুনতে হয়, অন্যদিকে সময়েরও অপচয় হচ্ছে। তাই এলাকাবাসী প্রায় কয়েক বছর ধরে গাছটি কাটার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিতভাবে দাবি জানিয়ে আসছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

বাসাইল বাজারের দোকানমালিক মো. হায়াতুল মো. সুলতান বলেন, আমাদের দুজনের দোকানের মধ্যবর্তী স্থানের রাস্তায় পড়েছে গাছটি। প্রায় প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন যাওয়ার চেষ্টা করার সময় আমাদের দোকানে ধাক্কা লাগে।

পাশের দোকানি মো. সুলতান বলেন, গাছটির কারণে আমাদের দোকান ও বিভিন্ন মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। তা ছাড়া গাছের ডালপালা পড়ে বিকট শব্দ হয় এবং গাড়িরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ গাছের কারণে আমাদের দোকানের মালামাল আনতে ঘুরে আসার জন্য অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা বন কর্মকর্তা আবদুল লতিফ ঢাকা পোস্টকে জানান, এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এর সত্যতা পাই। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। অনুমতি পেলে কাটার ব্যবস্থা করা হবে।

এনএ