মেয়ে রুপা আকতারের পেটে ব্যথা নিয়ে কয়েকদিন আগে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সদর উপজেলার বারুহাস গ্রামের নাসিমা বেগম। তবে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও রুপাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে বাড়ি যাওয়ার জন্য তারা কোনো গাড়ি পাননি। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হেঁটে বাস টার্মিনালের উদ্দেশ্যে রওন হন অসুস্থ রুপা আকতার, তার মা নাসিমা বেগম এবং দাদি নাজমা বেগম।

হাসপাতাল থেকে হেঁটেই তারা শহরের কানাইখালী এলাকায় আসেন। সেখানে এসে দেখেন পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখানে একজন পুলিশ সদস্যকে তারা ভয়ে ভয়েই বলেন তাদের যদি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় তাহলে খুব উপকার হয়। 

পাশেই ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিল আকতার। তাকে গিয়ে একজন পুলিশ সদস্য সব কিছু বলতেই তিনি রাজি হয়ে গেলেন এবং তাদের গাড়িতে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলেন। পরে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেন তিনি। 

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) দুপুরে নাটোর শহরের খানাইখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  

অসুস্থ রুপা আকতার বলেন, গাড়ি না পাওয়ার কারণে হতাশ হয়েছিলাম। প্রথমে তো ভাবছিলাম বাড়িই পৌঁছাতে পারব না। পরে পুলিশ অফিসারকে বলতেই তিনি বাড়িতে পৌঁছে দিলেন। সত্যিই আমি অবাক হয়েছি, কখনও ভাবিনি পুলিশ আমাদের বাড়ি পৌঁছে দেবে। তিনি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া সার্কেল) জামিল আকতার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। আর পুলিশ সব সময় সাধারণ মানুষের বন্ধু হয়ে পাশে রয়েছে। লকডাউনে কোনো যানবাহন না পাওয়ার কারণে অসুস্থ রুপা আকতারসহ তার মা এবং দাদিকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ জনগণের সেবক। আমরা জনগণের জন্যই কাজ করি। আমাদের প্রতি অনেকের অনেক ভুল ধারণা কাজ করে। বিষয়গুলো পীড়াদায়ক। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন মানবিক কাজে জনগণের পাশে আছি। এটা অব্যাহত থাকবে।

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, অসুস্থ রুপাকে পুলিশের গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ঘটনাটি আমি শুনেছি। পুলিশ অফিসারদের এমন কাজে আমি গর্ববোধ করি। পুলিশ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছে। ভবিষ্যতে আমাদের এমন মানবিক কাজ অব্যাহত থাকবে। এমন কাজ আমাদের পুলিশের জন্য গর্বের। 

তাপস কুমার/আরএআর