ছয়টি গ্রামের বেশকিছু অংশ এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে/ ছবি ঢাকা পোস্ট

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং ভারতের মেঘালয় থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে ৬ গ্রামের মানুষের।

এদিকে দুর্গাপুর উপজেলা কুল্লাগড়া ইউনিয়নের সোমেশ্বরী নদী তীরবর্তী কামারখালী, বড়ইকান্দি, বহেরাতলী, ভূলিপাড়া, রানীখং ও সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া গ্রামের বেশ কিছু অংশ নদী গর্ভে বিলীন গেছে। নদীর পানি বাড়তে থাকায় বেড়েছে নদী ভাঙনের মাত্রাও। এ অবস্থায় চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী ছয় গ্রামের বাসিন্দাদের।

অন্যদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সোমেশ্বরী নদীতে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হুমকিতে পড়েছে ওই এলাকার বিদ্যালয়, মসজিদ, রানীখং ধর্মপল্লীসহ নানা স্থাপনা।

শনিবার (৩ জুলাই) বিকেলে ভাঙনকবলিত এলাকার বনেরাতলী গ্রামের বাসিন্দা হিরন মিয়া, কামারখালী গ্রামের বাসিন্দা রুবেল পাঠান এবং বড়ইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্ট বলেন, নদী ভাঙনের জন্য আমরা খুবই আতঙ্কে আছি। সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকি। কারণ, কখন যে ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে যায় সেই চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন রোধে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে ৯০০ মিটার ভাঙন এলাকায় ৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়। কিন্তু ধীরগতিতে কাজ করায় এখনও তা শেষ হয়নি। ৯০০ মিটার কাজের মধ্যে মাত্র ২০০ মিটার কাজ সম্পন্ন হলেও বেশিরভাগ কাজই অসম্পূর্ণ রয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা অনেক মানববন্ধন ও আন্দোলন করার ফলে সরকার গত বছর নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন রোধে ৯০০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ বসানোর প্রকল্প অনুমোদন দেয়। কিন্তু ঠিকাদারদের গাফিলতির কারণে কাজ শেষ না হওয়ায় এখন সোমেশ্বরী নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, নতুন করে নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবো নিয়োজিত টাস্কফোর্স ভাঙন এলাকায় ফেলার জন্য বস্তাগুলো গুনে না দিলে ঠিকাদার তা বসাতে পারবে না। তাই কাজে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে নতুন করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় এলাকা পরিদর্শন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

মো. জিয়াউর রহমান/এসকেডি