বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়েছে

দক্ষিণাঞ্চলে উদ্বেগজনকহারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম)। ইতোমধ্যে হাসপাতালটির পাঁচ তলা বিশিষ্ট ৩০০ শয্যার করোনা ইউনিট রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। 

হাসপতালের পরিচালক জানিয়েছেন, সংকটাপন্ন রোগী ছাড়া আপেক্ষিক ভালো অবস্থার রোগীদের ভর্তি নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। মূলত চিকিৎসক ও নার্সের অভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। 

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়েছে। সোমবার (১২ জুলাই) থেকে রোগী ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল। তিনি জানান, ২২টি বেড ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। একজন রোগী ভর্তি করা হয়েছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনে করোনা ইউনিট চালু করা হয়। ১০ বেড থেকে শুরু করে ৫০ বেড করা হয় গেল বছর। আর চলতি বছরে যথাক্রমে ১০০, ১৫০,  ২০০ এবং চূড়ান্তভাবে ৩০০ বেডে উন্নীত করা হয়। 

হাসপাতালের দ্বিতীয় তলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কোনো তলায়ই রোগী ভর্তির বেড খালি নেই। সকাল ৮টা পর্যন্ত দেওয়া রিপোর্টে আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে ভর্তির সংখ্যা ৩০৭ জন থাকলেও বিকেলের মধ্যে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২২ জনে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিট ৩শ বেডের বেশি করা সম্ভব নয়। আমার তো সাপোর্ট নেই। তারপরও দুইজন চিকিৎসক ও তিন শিফটের ৪৫ জন নার্স নিয়ে চেষ্টা করছি করোনা ইউনিট চালানোর। এর বেশি আমার সামর্থ্য নেই। যা সম্ভব তা করেছি।

তিনি আরও বলেন, সংকটাপন্ন রোগী ছাড়া আপেক্ষিক ভালো অবস্থার রোগীদের ভর্তি নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। মূলত চিকিৎসক ও নার্সের অভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। ভর্তি নিলে এই রোগীরা বেশ ভোগান্তির মধ্যে থাকবে। 

ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, শুধু ভর্তি নিলেইতো রোগ ভালো হবে না, চিকিৎসা সেবাও দিতে হবে। কিন্তু চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সক্ষমতা না থাকলে সেবা দিব কীভাবে?

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, রোগীর চাপ সামলাতে আমাদের সক্ষমতা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে জেনারেল হাসপাতালে কিছু বেড চালু করা হয়েছে। রোগীর চাপ বাড়লে পুরো হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি করা হবে। আমরা সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছি।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর