ঈদে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়ছে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। যাত্রী ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করছে ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ। 

এতে ঘাট এলাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ও সহযোগিরা। ৩০ মিনিটের নৌপথ পারাপারে অপেক্ষ করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস, ছোট গাড়ি পারাপার করায় ঘাট এলাকায় আটকে পড়া এসব ট্রাক চালকদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১৭ জুলাই) বেলা পৌনে ৩টার দিকে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার দুটি ট্রাক টার্মিনাল পণ্যবাহী ট্রাকে ভর্তি ছিল। জিরো পয়েন্ট থেকে আরসিএল মোড় ছাড়িয়ে গেছে পণ্যবাহী ট্রাকের সারি। সব মিলে পাঁচ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ঘাট পারাপারের অপেক্ষ থাকতে দেখা গেছে। 

অন্যদিকে শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, অর্ধশতাধিক ছোট গাড়ি নৌপথ পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। সকাল থেকে যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ির চাপ থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের। তবে নৌপথে যানবাহন পারাপার স্বাভাবিক রাখতে ১৬টি ফেরি দিয়ে অপেক্ষামাণ এসব যানবাহন পারাপার করছে ঘাট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পাটুরিয়া ট্রাক টার্মিনালে কথা হলে কুষ্টিয়াগামী ট্রাকচালক মোমিন মিয়া বলেন, গতকাল রাত ৪টার দিকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে আসছি। এখনও ফেরিতে উঠতে পারি নাই। সকাল থেকেই যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ির চাপ থাকায় সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক কম পারাপার করছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। 

আরেক ট্রাক চালক জুবায়ের বলেন, প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে ঘাট এলাকায় বসে আছি। লগে তেমন টাকাও নাই। আমাদেরও পরিবার আছে, আমারও তো ঈদ করবো নাকি? পাটুরিয়া ঘাটে যতো ভোগান্তি ট্রাক চালকদের। ভোগান্তি লাঘবে ঘাট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ৩৫ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে মানিকগঞ্জে। কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করায় মহাসড়কে যানবাহন কিছুটা বেড়েছে। তবে কোনো যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা নেই। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হাইওয়ে পুলিশ টহল দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পাটুরিয়া হয়ে গ্রামের বাড়ি যেতে শুরু করেছে। যে কারণে সকাল থেকেই পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ঘরমুখো মানুষ, যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ির চাপ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে বাস, ছোট গাড়ি ও জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হচ্ছে। এ কারণে ঘাট এলাকায় আটকে থাকা সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাকচালকদের ভোগান্তি বাড়ছে। যাত্রী ও গাড়িগুলো নির্বিঘ্নে পারপার করতে নৌপথে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। সর্বশেষ পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় পাচঁ শতাধিক সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক, শতাধিক বাস ও অর্ধশতাধিক ছোট গাড়ি নৌপথ পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। 

সোহেল হোসেন/আরএআর