নূরুল ইসলাম নাহিদ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় নূরুল ইসলাম নাহিদ (৩১) নামে এক সাংবাদিককে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সালথা থানার পুলিশ উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের রঘুয়ারকান্দি গ্রামে তার বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। নাহিদ অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকা টাইমসের সালথা উপজেলা প্রতিনিধি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, গত ৫ এপ্রিল সালথায় সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।

তবে এ দাবি নাকচ করে দিয়ে সালথায় কর্মরত সাংবাদিকরা বলেছেন, ৫ এপ্রিলের হামলার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে যে তিনজন সাংবাদিক উপজেলা পরিষদের দোতলায় আটকা পড়েছিলেন তাদের মধ্যে নূরুল ইসলামও ছিলেন।

জানা গেছে, সাংবাদিক নূরুল ইসলাম গট্টি ইউনিয়নের রঘুয়ারকান্দি গ্রামে মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। নূরুল ইসলাম বিবাহিত এবং দুই মেয়ের বাবা। তিনি দীর্ঘ সাত বছর ধরে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সালথা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

নাহিদের ছোট ভাই রবিউল ইসলাম (২৯) ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সালথা থানা পুলিশের একটি দল প্রথমে তাদের বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলে। এসময় পাশের ঘরের দিকে তাকিয়ে পুলিশ জানতে চান ওই ঘরে কে থাকেন? রবিউল বলেন, তার ভাই সাংবাদিক নূরুল ইসলাম থাকেন। এ সময় পুলিশ তাকে বলেন, তোমার ভাইকে ডেকে তোল। নাহিদ ঘুম থেকে উঠে এলে পুলিশ তাকে বাইরে আসতে বলেন। এসময় নাহিদ লুঙ্গি পরিহিত ছিলেন। তিনি প্যান্ট পড়তে চাইলে পুলিশ জানায়, পড়তে হবে না। একটু কথা বলব সামনে গিয়ে। এভাবেই তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় মধ্যরাতে।

নাহিদের সহকর্মী সাংবাদিক আবু নাসের হোসেন বলেন, ৫ এপ্রিল সহিংস ঘটনার সময় তিনি, নূরুল ইসলামসহ কয়েকজন সাংবাদিক ইউএনও ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে উপজেলা কমপ্লেক্সের দোতলায় একই কক্ষে আটকা পড়েছিলেন। হামলাকারীরা যখন কমপ্লেক্স ভবনের নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেয় তখন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাইপ বেয়ে নিচে নেমে আসেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনায় নূরুল ইসলামকে হয়রানি করার কোনো সুযোগ নেই।

ফরিদপুরের পুলিশ সুাপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, সালথায় গত ৫ এপ্রিল সহিংস ঘটনায় পুলিশ যে মামলাটি দায়ের করেন ওই মামলার এক আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নূরুল ইসলামের নাম এসেছে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যই তাকে নিয়ে আসা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। নূরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়নি।

সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি সেলিম হোসেন মোল্লা বলেন, সালথার সাংবাদিকরা বরাবরই ওই হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করাসহ সহিংস ঘটনার বিপরীতে অবস্থান নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। নূরুল ইসলামও তার বাইরে নয়। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সঙ্গে মতবিনিময় করে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।

এমএএস