৬ মাসের ফাতেমা ফিরল অসুস্থ মায়ের কোলে
গাজীপুরের শ্রীপুরে টিএমএসএস নামের এনজিও থেকে ঋণ পরিশোধের পরও দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার শাহনাজ পারভীনের জামিন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) বিকেল ৩টায় গাজীপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শেখ নাজমুন নাহার (২) তাকে জামিন দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী এমদাদুল হক মাসুম। জামিন শুনাননিতে আদালতে উভয়পক্ষের আইনজীবী ও টিএমএসএস’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেন।
বিজ্ঞাপন
জামিনের পরই ছয় মাসের শিশু ফাতেমা তার মায়ের কোলে ফিরেছে। যদিও গ্রেফতারের পর মা পারভীন সুলতানা মানসিক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে গ্রেফতারের পর থেকে শিশুটি একা হয়ে পড়ে। তাকে সামাল দিতে পরিবারের সদস্যদের বেগ পেতে হয়। দীর্ঘক্ষণ সময় ঘুমিয়ে ও কান্নায় সময় অতিবাহিত করেছিল শিশু ফাতেমা। মাকে কাছে পেয়ে যেন রাজ্যের আনন্দ ভর করেছিল শিশুটির মাঝে। তবে মা অসুস্থ থাকায় শিশুটিকে সঙ্গ দিতে পারছিলেন না।
বিজ্ঞাপন
শিশুটির বাবা নুরুল আমীন বলেন, সারারাত শিশুটি তার মায়ের জন্যই কান্নাকাটি করে। এদিকে তার স্ত্রীকে সকালে আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি তার শিশু ফাতেমাকেও নিয়ে যান। তবে বারবার কাকুতি জানিয়েও তার মায়ের কোলে শিশুকে দেওয়া যায়নি। সন্তানের কথা ভেবে মা শাহনাজ পারভীন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে মানসিকভাবে সে ভেঙে পড়েছে।
টিএমএসএস’র গাজীপুর জোনাল ম্যানেজার আতাউর রহমান বলেন, ঋণ পরিশোধ না করায় এই নারীর নামে মামলা রুজু হয়েছিল ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে। আর তিনি ঋণ পরিশোধ করেছিলেন ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু আমাদের ভুল হয়েছে শাহনাজের নামে মামলাটি প্রত্যাহার না করে। শাখা ব্যবস্থাপক বদলি হয়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, টিএমএসএস নামের এনজিও থেকে শাহনাজ পারভীন ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের পরও দায়ের করা মামলায় গত সোমবার তাকে গ্রেফতার করেন শ্রীপুর থানা পুলিশ। এ সময় তার ছয় মাসের দুগ্ধজাত শিশু ফাতেমা একা হয়ে পড়েন।
এ নিয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘এনজিওর মামলায় মা গ্রেফতার, বাড়িতে কাঁদছে দুধের শিশু’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পরপরই তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে টিএমএসএসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে আজ (মঙ্গলবার) ওই নারীর জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার জাহাঙ্গীর আলম হিমু, গাজীপুর জোন জোনাল ম্যানেজার আতাউর রহমান, শ্রীপুর অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার শিহাব হোসেন, শ্রীপুর-১ শাখা প্রধান আব্দুল আলিম ও মামলার বাদী ডেপুটি সিনিয়র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আসলাম উদ্দিন মৃধা।
শিহাব খান/এমএসআর