পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুলের (২২) ডান হাতের কব্জি কর্তনের ঘটনায় সদ্য বহিষ্কৃত মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুলসহ ১৭ জনের নামে কলাপাড়া থানায় মামলা হয়েছে। 

রাকিবুলের মা মোসা. রাহিমা বেগম বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি নোমান হাওলাদার, খলিল হাওলাদার ও নয়ন বয়াতীকে রাতেই গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করেছে। 

এর আগে বুধবার রাত ৯টায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তেগাছিয়া বাজার সংলগ্ন ব্রিজের ঢালে মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুলের ডান হাতের কব্জি কর্তন করে একই সংগঠনের তার প্রতিপক্ষ গ্রুপ। এসময় দু’গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ও তার ভাই রায়হানও আহত হয়।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাকিবুল ও রায়হানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

শুক্রবার সকালে রাকিবুলকে বরিশাল থেকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে রাকিবুল পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

রাকিবুলের বাবা নাসির মাতুব্বর জানান, সন্ত্রাসীরা তার ছেলের ডান হাতের কব্জি কেটেই ক্ষান্ত হয়নি। ডান হাতের কনুই গুড়িয়ে দিয়েছে। বাম পাশের কানের ওপর দেয়া কোপটি ৯ ইঞ্চি গভীর হয়েছে। পিঠের কোপটি ফুসফুস পর্যন্ত গিয়েছে। এখন পর্যন্ত রাকিবুল’র জ্ঞান ফেরেনি। তিনি রাকিবুলের ওপর বর্বর হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

এদিকে সংগঠনের আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান জয় ও সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়েছে। 

কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম আশিক তালুকদার বহিষ্কারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছাত্রলীগের কেউ দলের আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারসহ তার বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

কলাপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ ইতোমধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
 
কাজী সাঈদ/এমএএস