সকাল ৮টায় বরিশালের বানারীপাড়া থেকে হেঁটে, ভ্যানে, রিকশায় আবার অটোরিকশায় চড়ে শরীয়তপুর এসেছেন নাসরিন বেগম (৩৩)। তার কোলে আট বছরের শিশু হাসিনা। তাদের গন্তব্য নারায়ণগঞ্জ। রোববার (০১ আগস্ট) গার্মেন্টস খোলার ঘোষণায় নাসরিনের মতো অনেকেই হেঁটে, কেউ ভ্যানে, কেউ রিকশায় আবার কেউ আটোরিকশায় করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এতে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনই গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

রোববার থেকে শিল্পকারখানা খোলার সরকারি নির্দেশনা জারির পর থেকে সড়কে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরগামী মানুষের চাপ বেড়েছে। চাকরি হারানোর ভয় ও অর্থনৈতিক টানাপোড়নের কারণে নানা দুর্ভোগ নিয়ে কর্মস্থলের দিকে ছুটছেন শ্রমিকরা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে সড়কে চাপ বেড়েছে। বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক বন্ধ থাকায় লোকজন বরিশালের মুলাদী হয়ে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট দিয়ে শরীয়তপুর শহর হয়ে বাংলাবাজার ঘাটে যাচ্ছেন। সড়কে মোটরসাইকেল, ভ্যান, অটোরিকশা, সিএনজির সংখ্যা ছিল বেশি। তবে কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। যে যেভাবে পারছেন কর্মস্থলে পৌঁছানোর জন্য চড়ে বসছেন সিএনজি, অটোরিকশা, ভ্যান, ভটভটি এমনকি মোটরসাইকেলে। ছোট একটি ভ্যানে নেওয়া হচ্ছে আটজন যাত্রী। 

যাত্রীরা বলেন, কোনোভাবেই কালকের অফিস মিস করা যাবে না। তাহলে চাকরি চলে যাবে।  মুলাদী থেকে আবুপুর ট্রলার ভাড়া ১০ টাকা। আজকে সেই ভাড়া ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। আবুপুর থেকে শরীয়তপুরের গাড়ি ভাড়া ১০০ টাকা। আর আজ নেওয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা। উপায় নেই, যেতে হবে।

হানিফ কাউছার নামে এক পোশাক শ্রমিক বলেন, সরকার লকডাউন দিয়ে রাস্তাঘাট বন্ধ করেছে। হুট করে আবার গার্মেন্টস খুলে দিল। আমরা যারা দেশে ঈদ করার জন্য এসেছি তারা তো যেতে পারিনি। না যেতেই সব খুলে দিল। যেহেতু খুলেছে সেহেতু বাস চলাচলের অনুমতি দিয়ে দিলে এতো কষ্ট হত না। 

আরেক পোশাক শ্রমিক হেলেনা আক্তার বলেন, সকাল ৬টায় পরিবার-পরিজন নিয়ে রওনা দিয়েছি। রাস্তায় গাড়ি নেই, ভ্যানে এই পর্যন্ত এসেছি। সামনেও মনে হয় ভ্যানে যেতে হবে। ভ্যান না পেলে হেঁটে। অটোকিশায় বাংলাবাজার ঘাটে যেতে ৪শ থেকে ৫শ টাকা চাচ্ছে। কী করবো, এতো টাকা এখন কই পাব। তাই হেঁটে বা ভ্যানে যাব।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর