কঠোর লকডাউনের মধ্যেই রোববার (০১ আগস্ট) থেকে শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় ঈদের ছুটিতে থাকা শ্রমিকরা নানা ভোগান্তি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি, খোলা ট্রাক ও পিকআপে চড়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে তারা গন্তব্যে যাচ্ছেন। এছাড়াও মহাসড়কের বিভিন্ন মোড়ে হাজার হাজার শ্রমিককে পরিবহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৮টার পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শ্রমিকদের ঢল নামে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থলে ফিরতে মহাসড়কে শ্রমিকদের এক প্রকার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিযোগিতার মধ্যে বাধ সাধে শ্রাবণের বৃষ্টি। এই বৃষ্টি কর্মস্থলে ফেরা শ্রমিকদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ত্রিশাল থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর উদ্দেশ্যে পরিবার নিয়ে রওনা হয়েছেন নাদিম মিয়া। তিনি জানান, ত্রিশাল থেকে মাওনা চৌরাস্তা প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ আসতে তার দেড় হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাকি পথ যেতে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মালেকের সঙ্গে কথা বলেন। টঙ্গী পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া চাইলেন ১৫০০ টাকা। এতে তার সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ হয়ে যাবে।

সিএনজিচালক মালেক মিয়া বলেন, সিএনজি নিয়ে মহাসড়ক হয়ে টঙ্গী যাওয়া যাবে না। এতো পথ গেলে পুলিশ পথে আটকে দেবে, মামলা দিয়ে আটক রাখবে। আমরা ভেতরের সড়ক ধরে টঙ্গী পর্যন্ত যাব। তাই ভাড়া একটু বেশিই দিতে হবে। 

এদিকে মোটরসাইকেলে মাওনা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা ৩০ কিলোমিটার সড়কে জনপ্রতি ৪০০ টাকা, অটোরিকশা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, খোলা ট্রাক জনপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পিকআপ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করছে। নিরুপায় হয়ে শ্রমিকরা ভাড়া বেশি নেওয়ার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছেন না।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা আরেক শ্রমিক তামিম আহমেদ বলেন, রাতে রওনা হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিভিন্ন রিকশা-ভ্যানযোগে জৈনাবাজারে পৌঁছেছি। রাস্তায় অতিরিক্ত ভাড়ার পাশাপাশি খুব ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। 

মাসুমা আক্তার নামে অপর এক কারখানার শ্রমিক জানান, তিনি ভালুকা থেকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করেন। ভালুকা থেকে অটোরিকশায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনাবাজার পর্যন্ত এসেছেন। অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ায় সেখান থেকে বাকি সড়ক তিনি হেঁটেই রওনা দেন। 

তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময় রাজেন্দ্রপুর থেকে ভালুকার বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু লকডাউনে কয়েক গুণ ভাড়া বেশি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এটা দেখার কেউ নেই।

শিহাব খান/আরএআর