শেরপুর সদর উপজেলায় গত কদিন ধরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে অন্তত ৫ গ্রামের হাজারো মানুষ, ফসলি জমি, মসজিদ ও বাড়ি-ঘরসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ভাঙনকবলিত এলাকাগুলো হলো, সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চুনিয়ার চর, ঘোড়াপাড়া, ডাকপাড়া, ভাগল ঘর, ভাগল ঘর নতুনপাড়া। গ্রামবাসীর আশঙ্কা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে চুনিয়ারচরসহ ৫টি গ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়ে যাবে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, ব্রহ্মপুত্র নদীর দুই পাশের কোনো পাশেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতিবছরই ভাঙন দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিঘায় বিঘায় আবাদি জমি ব্রহ্মপুত্র গর্ভে চলে যাচ্ছে। 

স্থানীয় চুনিয়ারচর গ্রামের জামিনুল ইসলাম জামিল ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এর ফলে প্রতি বছর ব্রক্ষপুত্র নদের তীব্র স্রোতে একরের পর একর ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

ভাগলগড় নতুন পাড়ার কৃষক আহালু মন্ডল জানান, এমনিতেই আমরা দরিদ্র কৃষক। এক মৌসুমে ফসল ঘরে তুলতে পারি। আরেক মৌসুম তো বন্যার পানির নিচেই নষ্ট হয়। এর মধ্যে আবার যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হইছে। সব জমিটুকু নদীর পেটে চলে গেলে, ফসল কই ফলামু, বউ-বাচ্চা নিয়া খামু কি? আমাগো তো রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াইতে অইবো।

ঘোড়াপাড়া মসজিদের ইমাম মো. শামসউদ্দিন মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, গত কয়েক বছর ধরে ব্রক্ষপুত্র নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। যেভাবে নদী ভেঙে গ্রামের দিকে এগোচ্ছে তাতে আমাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মাদরাসাসহ একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী গর্ভে চলে যাবে। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি যেন অতি দ্রুত নদী ভাঙনরোধে মজবুত বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকবর আলী বলেন, নদী তীরবর্তী প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি ভেঙে পড়ার মত। এখনি যদি ব্রক্ষপুত্র নদের পাড়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণ না করা হয়। তাহলে ৫ গ্রামের হাজারো মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর হারাবে। নদী গর্ভে বিলীন হবে ফসলি জমি, মসজিদ ও বাড়ি-ঘরসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

শেরপুরের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ ঢাকা পোস্টকে জানান, আমি গত ৯ জুলাই ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমএএস