বিজিবির মামলায় জামিন পেলেন নারী এনজিও কর্মী
জামিন পেয়ে আদালতের বারান্দায় এনজিও কর্মী ফারজানা আক্তার
কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ‘ব্লাস্টের’ এক নারী কর্মীর বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করে বিজিবি। সেই মামলায় জামিন পেয়েছেন ফারজানা আক্তার নামে ওই এনজিও কর্মী।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজারের জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহর আদালতে হাজির হয়ে জামির আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন।
বিজ্ঞাপন
আদালত চত্বরে ফারজানার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর শুক্কুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন এনজিও কর্মীকে হয়রানির উদ্দেশ্যে এ মামলা করা হয়েছে। চেকপোস্টে তল্লাশির সময় শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনায় এমন মানহানির অভিযোগ তুলেছে বিজিবি। এ মামলায় ফারজানায় জিতবেন বলে আশাবাদী তিনি।
বিজিবির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশ প্রেমিক একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ মানহানিকর। জামিন পেলে যে বিচার শেষ তা নয়। সুষ্ঠু পুলিশি তদন্ত হয়েছে। হয়তো নারী হিসেবে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জামিন দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
আদালত সূত্রে জানা যায়, গেল বছরের ৮ অক্টোবর টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের দমদমিয়া চেকপোস্টে নিয়মমতো অন্যদের সঙ্গে ব্লাস্টের এক নারী কর্মীকেও তল্লাশি করা হয়। অটোরিকশার যাত্রী ওই নারী পরে বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। তার বক্তব্য দিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় অনেক গণমাধ্যম তাদের অনলাইন ভার্সনে প্রতিবেদনও প্রচার করে। এ নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায়।
ঘটনার সত্যতা জানতে দ্রুত তৎপর হয়ে উঠে গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য গণমাধ্যমও। কিন্তু পরে প্রশাসনিক নির্দেশে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে সেই নারী এনজিও কর্মীর ধর্ষণের আলামত পাননি বলে রিপোর্ট দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি মিথ্যা দাবি করে গত ১০ নভেম্বর কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই নারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি ৫০০ ধারায় বিজিবির সুবেদার মোহাম্মদ আলি মোল্লা ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি আমলে নেওয়ার পর আদালত সাত কার্য দিবসের মধ্যে আর্জিতে উল্লিখিত সাক্ষীদের জবানবন্দি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য টেকনাফ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনায় মামলাটি তদন্ত করেন টেকনাফ থানার ওসি (অপারেশন) ইন্সপেক্টর শরিফুল ইসলাম। তিনি ওই বছরের (২০২০) ২২ নভেম্বর রোববার আদালতে প্রতিবেদন জমা দিলে চাঞ্চল্যকর মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেদনটি দাখিলের পর আসামি নারী এনজিও কর্মীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
এসপি