ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রকাশ্যে এলেন হেফাজতের দুই নেতা
চার মাসেরও বেশি সময় পর প্রকাশ্যে এলেন হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুবারক উল্লাহ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (১৫ আগস্ট) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কান্দিপাড়াস্থ জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার মসজিদে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৬-২৮ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। এরপর থেকে জেলায় প্রকাশ্যে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা সাজিদুর রহমানকে দেখা গিয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেওলয়ে স্টেশন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ভবন, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, সুর সম্রট ওস্তাদ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন ও খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবনসহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এ ছাড়া তিন দিনের ওই তাণ্ডবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হন। এসব ঘটনায় দায়ের হওয়া ৫৫টি মামলায় আসামি করা হয় ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে।
তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ী করে হেফাজত নেতা সাজিদুর রহমান ও মুবারক উল্লাহকে গ্রেফতারের দাবি জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। পরবর্তীতের তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেওয়ার জন্য সদর মডেল থানায় এজাহারও জমা দেন মোকতাদির চৌধুরী। তবে তার সেই এজাহার মামলা হিসেবে নেয়নি পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া জেলার বিশিষ্টজনেরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েও হেফাজত নেতা সাজিদুর রহমান ও মুফতি মুবারক উল্লাহকে গ্রেফতারের দাবি জানান। তবে তাণ্ডবের পর থেকেই অনেকটা আড়ালে চলে যান হেফাজত নেতা সাজিদুর রহমান ও মুবারক উল্লাহ। জেলায় তাদের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, যে মামলাগুলো হয়েছে সেগুলো তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে। আইনের সঙ্গে অপরাধীদের সম্পৃক্ততা করাই আমাদের মূল দায়িত্ব। সেক্ষেত্রে আমাদের কোনো কার্পণ্য নেই। এখনো তদন্ত ও গ্রেফতার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আজিজুল সঞ্চয়/এসপি