রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত যানবাহন। নদীতে প্রবল স্রোত ও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটের গাড়ির চাপ এ রটে চলে আসায় ভোগান্তি বেড়েছে। দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ঘাটে এসে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর ফেরিতে উঠতে পারলেও পণ্যবহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানকে দীর্ঘ সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, ফেরিঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল পর্যন্ত গাড়ির লম্বা সারি। এই অংশে দুইশোর বেশি গাড়ি আটকে আছে ফেরি পারের অপেক্ষায়। এর মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান বেশি। 

অন্যদিকে ফেরিঘাটের যানজট এড়াতে ঘাট থেকে ১৩.৫ কিলোমিটার পেছনে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে কল্যাণপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৩০০ অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাককে আটকে রাখা হয়েছে। আশপাশে খাবার হোটেল, টয়লেট না থাকায় বিপাকে পড়ছেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়ালন্দ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাবাজার-শিমুলিয়ায় পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ওই রুটের সকল ট্রাক এই রুট ব্যবহার করছে। ফলে এই রুটে গাড়ির চাপ বেড়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আমরা গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে দিচ্ছি।  আটকে থাকা ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।

কুষ্টিয়া থেকে মালামাল বোঝাই করে ঢাকার উদ্দেশে সোমবার রাতে রওনা হন চালক মজিদ শেখ। মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে তিনি বলেন, সোমবার রাতে গোয়ালন্দ মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ আটকে দেয়। ভোরে পুলিশ ফেরিঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে দিলেও ঘাটে লম্বা লাইনের কারণে আরও ৪ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। 

গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা কুরিয়ার সার্ভিসের ট্রাক চালক মজিদ শেখ বলেন, মাল ডেলিভারি দিতে যাব ঢাকায়। রাতে চুয়াডাঙ্গা থেকে মাল নিয়ে রওনা হয়েছি। পরে গোয়ালন্দ মোড়ে এলে ট্রাফিক পুলিশ আটকে দেয়। এখনো গোয়ালন্দ মোড়েই আটকে আছি। শুনলাম ঘাটে চাপ পড়েছে গাড়ির। তাই আমাদের এখানে আটকে রাখা হয়েছে। ঘাটে চাপ কমলে আমাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকায় আমাদের খাওয়া-দাওয়া, গোসল, টয়লেটের সমস্যা হচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ম্যানেজার জামাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রবল স্রোতে ফেরি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এতে ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়ায় চাপ পড়েছে দৌলতদিয়া প্রান্তে। এই রুটে ২০টি ফেরি থাকলেও বর্তমানে ১৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। 

মীর সামসুজ্জামান/এসপি