এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় জলমহালের দখল নিয়ে শ্যামাচরণ বর্মণ (৬৫) নামে এক জেলে খুনের ঘটনায় সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ ৬৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। নিহতের ছেলে চন্দন বর্মণ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ আবেদন করেন। 

আদালতে আদালতে আবেদনটি দাখিলের পর বিচারক মিছবাহ উদ্দিন আহমদ বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এ ঘটনা নিয়ে থানায় আর কোনো মামলা হয়েছে কি-না, বিচারক জানতে চান। একই ঘটনায় থানায় একটি মামলা চলমান থাকায় থানা থেকে আদালতে প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আদালতে দাখিল করা মামলাটি স্থগিত এবং থানা থেকে প্রতিবেদন আসার পর এ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে আদেশ দেওয়া হয়। 

বিবাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল হাই তালুকদার ও আরফান আলী এ তথ্য জানিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন- সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, তার ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেলন হোসেন রোখন, মোবারক হোসেন মাসুদ ও মোবারক হোসেন যতনসহ ৬৩ জন। 

প্রসঙ্গত, ধর্মপাশার সুনই নদীর জলমহাল নিয়ে দুই মৎস্যজীবী সমিতির মধ্যে দুই বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। জলমহালের খাজনা পরিশোধ করে দুই পক্ষই মালিকানা দাবি করে আসছে। সম্প্রতি সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি চন্দন বর্মণের পক্ষের লোকজন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ভাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেলন হোসেন রোকনের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। 

এই দ্বন্দ্বের জের ধরে ৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দেক জলমহাল পাড়ে থাকা একপক্ষের মাছের খলায় আরেকপক্ষ আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রতিপক্ষের লোকজন সুনই গ্রামের সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি চন্দন বর্মণের বাবা শ্যামাচরণ বর্মণকে গলা কেটে হত্যা করেন। এ সময় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। জলমহালে থাকা একপক্ষের খলা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত শ্যামাচরণ বর্মণের মরদেহ উদ্ধার করে। 

এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে ধর্মপাশা থানায় এজাহার নিয়ে যান চন্দন বর্মণ। তবে পুলিশ তার মামলা গ্রহণ করেনি। পরদিন অজ্ঞাতনামা ৬৩ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের একজন এসআই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। নিহতের ছেলে চন্দন বর্মণ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন- প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার জন্য ধর্মপাশা থানা পুলিশ ওই মামলা নিয়েছে।

আরএআর