স্যার বলেছে সরকারি গাছের গুঁড়ি যা হয় হোক!
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বন বিভাগে সম্প্রতি ও দুই বছর আগে ঝড়ে ভেঙে পড়া মেহগনি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাসসহ আনুমানিক ৩ লাখ টাকার গাছের গুঁড়ি অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বন বিভাগের চত্ত্বরে ৮টি স্তুপে বিভক্ত গাছের গুঁড়িগুলো এভাবে পড়ে রয়েছে। সেগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করার কথা থাকলেও কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় উইপোকা খেয়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
গত মঙ্গলবার সরেজমিন ও বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, খোলা আকাশের নিচে গাছের গুঁড়িগুলো ৮টি স্তুপে পড়ে রয়েছে। সেগুলোর ওপর কোনো টিনসেডও নেই। লতাপাতায় ভরে গেছে গুঁড়িগুলো। বৃষ্টির পানিতে অনেক গুঁড়ি পচে গেছে। এগুলোর গায়ে নম্বর দেয়া রয়েছে। ভেঙে পড়া এসব গাছের গুঁড়ি ছিল উপজেলা বনবিভাগের বনায়ন করা। ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যেসব গাছ পড়ে ছিল সেই গাছগুলো গুঁড়ি করে বন বিভাগ সংরক্ষণ করে। এসব গুঁড়ি যেন নষ্ট না হয় এজন্য টিনসেড করার কথা থাকলেও পড়ে রয়েছে খোলা আকাশের নিচে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগে একজন কর্মকর্তা জানান, বড় স্যার এখানে থাকেন না। তাই তেমন গুরুত্বও নেই। গাছের গুঁড়িগুলো বিক্রয়ের কথা বলেছি। স্যার বলছে সরকারি গাছের গুঁড়ি যা হয় হোক।
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে উপজেলার বন বিভাগে কর্মরত গার্ড মকবুল জানায়, মেহগনি ও আকাশমনি, ইউক্যালিপটাসসহ বিভিন্ন জাতের গাছের ডুম রয়েছে। কেটে রাখা গাছের সংখ্যা কত তা তার জানা নেই।
বাগানমালী শাহজাহান বলেন, গাছের গুঁড়িগুলোতিন বছর আগের কাটা। উপজেলার বিভিন্ন সড়কে এসব গাছ বনায়ন করা হয়েছিল। গাছগুলো ঝড়ে ভেঙে পড়েছিল। সেইসব গাছের বয়স অন্তত ১২-১৫ বছর মধ্যে।
খানপুর ইউনিয়নের ভাটরা এলাকা থেকে গাছের চারা কিনতে আসা রাসেল ও আসলাম জানায়, আমরা এখান থেকে বিভিন্ন চারা ক্রয় করে নিয়ে যায়। বনবিভাগের সংরক্ষিত চত্ত্বরে গাছের গুঁড়িগুলো পচে নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কেউ খোঁজ রাখে না।
স্থানীয় ‘ছ’ মিল মালিক ফারুক জানান, বনবিভাগের মধ্যে অনেক মূল্যবান গাছের গুঁড়ি পচে গেছে। যা দিয়ে জ্বালানির খড়ি ছাড়া কাঠ বের হবে না আর। এগুলোর মূল্য এখন অর্ধেকও হবে কীনা সন্দেহ আছে।
এ বিষয়ে শেরপুর বন বিভাগের ফরেস্টার সামছুল আলমের সঙ্গে কথা বলতে তার অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
সাখাওয়াত হোসেন জনি/এমএএস