গাইবান্ধায় অপহরণের পর হত্যা মামলার কথিত এক মৃত ব্যক্তিকে এক বছর আট মাস পর জীবিত উদ্ধার করেছে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) পিবিআই। একই সঙ্গে এ মামলার রহস্য উদঘাটনও করেছে তারা।

শনিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে গাইবান্ধা পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন পিবিআই পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।

তিনি জানান, জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ডোমেরহাট ইউনিয়নের সূবর্ণদহ গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতি বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নিজপাড়া গ্রামের মো. ওয়াসিম জাহান তৌহিদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে জান্নাতি গর্ভবতী হলে স্থানীয়দের চাপে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পরে ওয়াসিম প্রতিনিয়ত যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন জান্নাতির পরিবারের কাছে। তারা যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে জান্নাতিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন ওয়াসিম। এরপর থেকে বন্ধ করে দেন তাদের ভরণপোষণও।

তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে সন্তানের ভরণপোষণ দাবি করে জান্নাতি বেগম সুন্দরগঞ্জ পারিবারিক জজ আদালতে স্বামী ওয়াসিম জাহান তৌহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলার দায় এড়াতে তৌহিদ আত্মগোপনে যান। একই বছরের ৮ ডিসেম্বর তার বড় ভাই নাজুমুল হুদা নাহিদকে দিয়ে (বাদী বানিয়ে) স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আমলি আদালতে (সুন্দরগঞ্জ) অপহরণ ও হত্যা মামলা করেন।

গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আদালত তৌহিদকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাক বাদীর বাড়িতে গিয়ে আঁচ করতে পারেন, পরিবারে নেই কোনো শোক-আহাজারি। এই সূত্র ধরেই মামলার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পিবিআই।

এসআই আবদুর রাজ্জাক বলেন, স্ত্রীর করা ভরণপোষণ মামলার দায় এড়াতেই গাজীপুরে আত্মগোপন করেন তৌহিদ। সেখানে পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। সব ঘটনা গোপন রেখে লালমনিরহাটের এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার করছেন তিনি।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মগোপনে যাওয়া তৌহিদকে গাজীপুর থেকে গত ১৯ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় বলেও জানান তিনি।

রিপন আকন্দ/এনএ