খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবুর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে কুমিল্লার ৩ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম মাহবুব খান এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। 

জালিয়াতি করে পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি বিক্রিসহ নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগে  খন্দকার মোশতাকের নাতি খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার তিনজনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- খন্দকার মোশতাকের নাতি খন্দকার ইফতেখার আহম্মেদ শাদ ও বাড়ির কেয়ারটেকার নিজাম উদ্দিন। 

মামলার বাদী খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার বলেন, খুনি মোশতাকের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আমাদেরকে ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি কানাডায় বসে দশপাড়া এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন। আমাদের ওয়ারিশদের স্বাক্ষর জাল করে বেশ কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। এছাড়া আরও কিছু সম্পত্তি বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। তার নির্দেশে এসব জালিয়াতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মোশতাকের বাড়ির কেয়ারটেকার নিজাম উদ্দিন। কেয়ারটেকার নিজাম উদ্দিনই মোশতাকপুত্রের সকল নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে থাকেন। কানাডায় বসে ওই কেয়ারটেকারের মাধ্যমেই বাহিনী নিয়ন্ত্রণসহ এলাকার আধিপত্য ধরে রেখেছেন মোশতাকপুত্র ইশতিয়াক।

অপর ওয়ারিশ কাজী রেহা কবির বলেন, খুনি মোশতাক আমার নানার পরিবারের সদস্য হলেও আমরা তাকে প্রাণভরে ঘৃণা করি। সর্বশেষ গত বছর মাকে নিয়ে হজরত খন্দকার কবির উদ্দিনের মাজার শরিফ জিয়ারত করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু মোশতাকপুত্রের কেয়ারটেকারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমাকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়নি। ওয়ারিশ সূত্রে আমরা এই স্টেটের উত্তরাধিকারী হলেও আমাদেরকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গায়ের জোরে মোশতাকপুত্র স্টেটের চেয়ারম্যান হয়ে নিজের এবং স্ত্রী-সন্তানদের ছবি টানিয়ে রেখেছেন। এখন যেহেতু তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে অবিলম্বে তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।

এ বিষয়ে দাউদকান্দি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা যতটুকু জানি মামলায় অভিযুক্ত আসামি খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু বিদেশে পালাতক আছেন। তারপরও গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি হাতে পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, খুনি মোশতাকের বাবা খন্দকার কবির উদ্দিনের পাঁচ ছেলে এবং পাঁচ মেয়ে। মৃত্যুকালে কবির উদ্দিন বিশাল সম্পত্তি রেখে গেছেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কবির উদ্দিনের কিছু সম্পত্তি কল্যাণমূলক কাজের জন্য ট্রাস্টের নামে লিখে দেওয়া হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা  বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। তারই প্রেক্ষিতে আগামী ৩১ আগস্ট তার বাড়ির সামনে খুনি মোস্তাকের প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ করার জন্য বিক্ষোভ সমাবেশেরে ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। 

আরএআর