পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় কাজলদিঘী ইউনিয়নের চৌধুরী হাটে ঘোড়ার মাংস বিক্রির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত আসামি সানাউল্লাহ (৩৩) ও হামিদুর রহমানসহ পাঁচজনকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

এ সময় মামলার বাদী বোদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিপন কুমার বসাক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহেদুল ইসলামকে তিরস্কার করেছেন আদালত।

এছাড়াও বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান ও বোদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আব্দুস সোবহানকে দ্বায়িত্ব পালন আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মতিউর রহমান এই আদেশ দেন।

আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ঘোড়ার মাংস খাওয়া হালাল সত্ত্বেও বিনা অপরাধে সানাউল্লাহ ও হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ) ও পেনাল কোডের ২৭৩ ধারায় এজাহার দায়ের করায় উপ-পরিদর্শক লিপন কুমার বসাককে ও মামলার তদন্তে গাফিলতি করায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জাহিদল ইসলামকে তিরস্কার করা হয়। ভবিষ্যতে তাদেরকে মামলা তদন্তের সময় নিজ দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সতর্ক করা হয়।

আদালতের আদেশে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা ঘোড়ার মাংস হালাল মনে করে খাওয়ার জন্য জবাই করেছিলেন। সহিহ বুখারিসহ একাধিক হাদিস গ্রন্থে ঘোড়ার মাংস হালাল মর্মে উল্লেখ আছে। সেহেতু আসামিরা মাংস খাওয়ার উদ্দ্যেশে ঘোড়া জবাই করে কোনো অন্যায় করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয় না।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৩  ডিসেম্বর জেলার বোদা উপজেলার কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরীহাটে ঘোড়া জবাই করার অভিযোগে সানাউল্লাহ ও হামিদুর রহমান নামে দুই যুবককে আটক করে পুলিশ। এ সময় ৩৫ কেজি ঘোড়ার মাংস জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাংস থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে বাকি মাংস বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমানের উপস্থিতিতে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। 

পরদিন বোদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিপন কুমার বসাক বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় দুই যুবককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। সাত দিন হাজতবাসের পর ২৭ ডিসেম্বর আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্ত হন। ওই দিনই আদালত ঘোড়ার মাংস হালাল নাকি হারাম তা ব্যাখ্যাপূর্বক বাদীসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমানকে প্রতিবেদন দিতে বলেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চলতি বছরের ৩০ জুলাই আদালদে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

মো. রনি মিয়াজী/ওএফ