২১২ এসআইকে ডিসি কোর্স থেকে অব্যাহতি
অনুমতি ছাড়া ঈদে বাড়ি যাওয়ায় টাঙ্গাইলে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিসি) প্রশিক্ষণার্থী ২১২ উপপরিদর্শককে (এসআই) ডিসি কোর্স থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ওই ২১২ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দফতর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে পিটিসি কর্তৃপক্ষ।
পরে পুলিশ সদর দফতর থেকে এই সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয় চলতি বছরের ২৭ মে। তবে টাঙ্গাইলের মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অমান্য করে ওই ২১২ জন পিএসআই তিন দিন ট্রেনিং সেন্টারে অনুপস্থিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
এদিকে অব্যাহতি পাওয়া পিএসআইদের (নিরস্ত্র) ১৯তম ডিসি কোর্স হতে অব্যাহতি প্রদানসহ শিক্ষানবিশ বাতিল করার পর উক্ত প্রার্থী পরবর্তীতে অনুষ্ঠিতব্য কোনও ডিসি কোর্সে মনোনিত হলেও আলোচ্য ডিসি কোর্সের সম্পন্নকৃত সময়কাল সমন্বয় করার সুযোগ থাকবে না বলে পুলিশ সদর সদর দফতর থেকে আদেশ জারিতে জানানো হয়।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের মহেড়ায় অবস্থিত পিটিসিতে এসআইদের (নিরস্ত্র) ১৯তম ডিসি কোর্সে ৮৭৭ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতি পেতে উপপরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার জন্য প্রশিক্ষণটি আবশ্যক। এই ১৯তম কোর্সটি শুরু হয় ২০২০ সালের ১৫ জুন মাসে।
বিজ্ঞাপন
প্রথম ছয় মাস তাদের নিজ নিজ ইউনিটে বাস্তব প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। পরবর্তী ৬ মাস টাঙ্গাইল পিটিসিতে শারীরিক প্রশিক্ষণে যোগ দেন তারা। ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিটিসিতে তাদের কোর্স শুরু হয়। এই প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ ১৫ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল।
এদিকে ঈদুল ফিতরে গত ১৩ থেকে ১৫ মে ছুটি থাকলেও দেশের করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থী ওই পিএসআইদের পিটিসিতেই অবস্থান করতে বলা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই তারা ঈদে বাড়িতে চলে যান। পরে পিটিসি কর্তৃপক্ষ পুলিশ সদর দফতরে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করে।
টাঙ্গাইল পিটিসির কমান্ড্যান্ট ময়নুল ইসলাম সদর দফতরে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেন ১৩ মে বিকাল ৫টা থেকে ১৫ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত অনুপস্থিত ছিলেন ২১২ জন প্রশিক্ষণার্থী। এতে বিভাগীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ করায় অভিযুক্তদের ডিসি কোর্স থেকে পুলিশ সদর দফতরের এক চিঠির মাধ্যমে তাদের অব্যাহতির নির্দেশ দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশিক্ষণার্থীরা জানান, পিটিসিতে প্রতিদিন তিনবার রোল কল করা হয়। তারা শুধু ঈদের দিন রাতের রোল কলে অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটিকে তিন দিনে পাঁচবার অনুপস্থিত দেখিয়ে সদর দফতরে চিঠি পাঠায়। এ সময় তারা বিষয়টিকে মানবিকভাবে বিবেচনার জন্য আইজিপির কাছে আবেদন জানান।
টাঙ্গাইল পিটিসির কমান্ড্যান্ট ডিআইজি ময়নুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। এতে প্রশিক্ষণার্থীদের কর্মস্থলে ঈদ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া ছিল। গণহারে চলে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।