ভারী বর্ষণ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা এক দিনের ব্যাবধানে বেড়েছে আরও ৮ সেন্টিমিটার।

এদিকে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও চলনবিলের পানিবৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার অর্ধলাখেরও বেশি মানুষ, তলিয়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল।

অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য জেলা শহর ও ৫টি উপজেলায় মজুত বাড়িয়ে ৭২১ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে সাত লাখ নগদ টাকা করা হয়েছে। শাহজাদপুরের নদীভাঙন ও সদরের নিম্নাঞ্চল এলাকায় শুরু করা হয়েছে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ ঢাকা পোস্টকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।

গত ১৪ আগস্ট থেকে শুরু করে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যমুনা নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নদীতীরবর্তী আরও কিছু নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় বিপাকে পড়েছেন বন্যাদুর্গতরা। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু রাস্তা বা স্কুল মাদ্রাসার মাঠে খোলা আকাশের নিচে থাকছে।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত কয়েক দিন হলোই যমুনায় পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানিবৃদ্ধি অন্তত আরও দুদিন অব্যাহত থাকবে। তবে পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত বন্যার তেমন কোনো ঝুঁকির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সদর ও শাহজাদপুরের কিছু এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছি। তিনি আরও বলেন, জেলার ৫টি উপজেলায় ২০০ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ করে নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা সেটা তাদের চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো সময় বিতরণ করবেন। এ ছাড়া জেলায় ৭২১ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা মজুত রাখা হয়েছে।

শুভ কুমার ঘোষ/এনএ