মাছের সঙ্গে এমন শত্রুতা!
বিষ প্রয়োগের কারণে ঘেরের সব মাছ মরে ভেসে ওঠে
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের বিষ প্রয়োগের ফলে পাঁচ লাখ টাকার মাছ মরে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে উপজেলার থানাপাড়া এলাকায় এই মাছের ঘেরে বিষ দেওয়া হয়।
প্রায় পাঁচ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে যাওয়ায় ভুক্তভোগী খামারি গোলাম মোস্তফা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিন বছর ধরে লালনপালন করে আসা পুকুর ভরা মাছের এ সময়ই বিক্রির মৌসুম। এমন সময় এই দুঃসংবাদ পেয়ে মুষড়ে পড়েন গোলাম মোস্তফা। তিনি একই এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
চোখেমুখে রাজ্যের হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, নৈশপ্রহরীর কাছে খবর পেয়ে পুকুরে এসে দেখি মাছ মরে ভাসছে। এ সময় পুকুর পাড়ে মাছ মারার জন্য ব্যবহৃত একধরনের বিষাক্ত ট্যাবলেট পড়ে থাকতে দেখি। রাতের আঁধারে কে বা কারা এই বিষ প্রয়োগ করে আমার ঘেরের পাঁচ লাখ টাকা দামের মাছ মেরে ফেলেছে।
পূর্ব কোনো শত্রুতার আঁচ না পেলেও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ঘটানো এমন জঘন্য কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন ভুক্তভোগী মৎস্য খামারি গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমি দুর্বৃত্তদের শাস্তি চাই।
বিজ্ঞাপন
ভবিষ্যতে আমাদের যেকোনো প্রকার প্রণোদনা বা সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা এই ক্ষতিগ্রস্ত খামারিকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেব। মাছচাষি গোলাম মোস্তফা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
খন্দকার শহিদুর রহমান, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা
গোলাম মোস্তফার সন্তান মিঠু বলেন, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করতেই পুকুরে মাছ নিধন করেছে চক্রান্তকারীরা। পুলিশ প্রশাসন যেন বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় নেয়, এ জন্য আমরা ইতিমধ্যেই আবেদন করেছি।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মহিবুল ইসলাম মহি বলেন, দৌলতপুর থানাপাড়া এলাকায় সংঘবদ্ধ দুষ্ট চক্র রয়েছে, যারা মাছচাষির ক্ষতি করার জন্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে। গোলাম মোস্তফার ঘেরের মাছ মরার খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খন্দকার শহিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভবিষ্যতে আমাদের যেকোনো প্রকার প্রণোদনা বা সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা এই ক্ষতিগ্রস্ত খামারিকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেব। মাছচাষি গোলাম মোস্তফা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। এমন অপরাধের সঙ্গে যে বা যারা যুক্ত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, দৌলতপুর উপজেলায় মাছের পুকুর বা ফসলের জমিতে এমন দুর্বৃত্তদের আক্রমণ প্রায়ই ঘটে। দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিলে অনেকাংশেই কমে আসবে বলে মনে করছেন এ খাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এনএ