পাঁচ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের নওপাড়া গ্রামের ৫৫ বছরের বৃদ্ধা নূরজাহান (ছদ্মনাম)। এরপর থেকে আলাদা ঘরে একাই বসবাস করে আসছিলেন তিনি। বাড়িটিতে আসা-যাওয়া ছিল প্রতিবেশী ২৫ বছর বয়সী যুবক রুমেলের (ছদ্মনাম)। সম্পর্কে তারা দাদি-নাতি। 

এরই মধ্যে এক পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ তা বাড়ে তাদের মধ্যে। একসময় তা রূপ নেয় অনৈতিক সম্পর্কে। তবে অনৈতিক এ সম্পর্কটি আর গোপন থাকেনি। অন্তরঙ্গ অবস্থায় তারা খেয়েছেন ধরা। যারপরনাই স্থানীয় সালিশি সিদ্ধান্তে ২৫ বছরের ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে ৫৫ বছর বয়সী বৃদ্ধাকে। গতকাল সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

মঙ্গলবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দাদি-নাতির বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়হিত ইউনিয়নের বিয়ের রেজিস্ট্রি কাজে নিয়োজিত কাজী মোহাম্মদ নুরুল্লাহ। তিনি বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় নওপাড়া গ্রামে বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে। বিয়েতে পাঁচ লাখ টাকার দেনমোহর ধার্য করা হয়েছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজ ঘরে প্রতিবেশী নাতির সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধরা পড়েন দাদি। পরদিন শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুরুব্বিরা সালিশে বসে নাতির সঙ্গে দাদির বিয়ের সিদ্ধান্ত দেন। বিয়ের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই নাতি পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা দাদিকে নাতির বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন। 

খবর শুনে একদিন পালিয়ে থাকার পর রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) নাতি বাড়ি ফিরেন। পরে ওইদিন আবারও স্থানীয়রা সালিশে বসে সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। 

যদিও এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না কেউই। ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ, এলাকার ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলামসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা সালিশের মাধ্যমে জোর করে এ বিয়ে দেন। ওই নারীও এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। মাফ চেয়েও পার পাননি তারা। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য খাইরুল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

তবে বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ জালাল জানান, অসুস্থতার কারণে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। দাদি-নাতির বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না, পরবর্তীতে তিনি শুনেছেন। 
 
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, দাদি-নাতির বিয়ের বিষয়টি পরে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে থানায় এখনও কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। 

উবায়দুল হক/এমএএস