নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের পারসিংড়া (বেদে পল্লী) মহল্লায় নির্বিচারে পাখি হত্যা করা হচ্ছে। আর অসচেতনতার অজুহাতে বার বার প্রকাশ্যে পাখি হত্যা করলেও বেদে পল্লীর বসবাসরত বাসিন্দাদের আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। দ্রুতই এ বিষয়ে প্রশাসনের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বেদে পল্লীর ২ জন নারীকে ৪টি বক পাখি জবাই করে প্রকাশ্যে বাহবা নিতে দেখা যায়। এসময় পরিবেশকর্মীরা কথা বলতে গেলে তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়। এর আগে গত ৩০ জুলাই বেদে পল্লীতে পাতি সরালি (বালিহাঁস) ছানাগুলোর সামনেই মা পাখিকে জবাই করে হত্যা করে জনৈক পিয়ারুল।

পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৪ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে জীবিত ৫টি ও মৃত ২টি পাতি সরালি ছানা উদ্ধার করা হয়। তারপরও তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। শুধু অসচেতন অজুহাত দিয়ে প্রায়ই পাখি হত্যা করেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছে বেদে সম্প্রদায়ের কিছু লোভী পাখি ঘাতক।

চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সহ-সভাপতি মো. হাসান ইমাম বলেন, পাখি শিকার ও হত্যা দণ্ডনীয় অপরাধ’ এ বিষয়ে একাধিক বার বেদে পল্লীতে লিফলেট বিতরণ ও সভা করা হয়েছে। তারপরও তাদেরকে রোধ করা যাচ্ছে না।

স্থানীয় সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. লাবু মিয়া বলেন, পাখি হত্যা বা খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য এর আগে একাধিকবার ওই মহল্লায় ঢোল সহরত দেয়া হয়েছে।

আর বর্তমান পৌর কাউন্সিলর সোহাগ আলী বলেন, এভাবে পাখি হত্যা দুঃখজনক বিষয়। পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, সিংড়া পৌর শহরের আত্রাই নদীর দহপাড় এলাকায় পারসিংড়া মহল্লায় বেদে সম্প্রদায়ের বসবাস। অসচেতনার অজুহাত দিয়ে বার বার পাখি হত্যা করেও কিছু লোভী পাখি ঘাতক অপরাধ করেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম.এম সামিরুল ইসলাম বলেন, পাখি শিকার ও হত্যারোধে দ্রুতই মাইকিং ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। এরপরও যদি অপরাধ করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তাপস কুমার/এমএএস