লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসহভাপতি মরহুম আ ন ম ফজলুল করিমের মালিকানাধীন ইউনিক ভবনের গেল বছরের কর পরিশোধ করেন ৭ হাজার টাকা। এবার তা বেড়ে নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। লাহারকান্দি এলাকার রফিক উল্যা গেল বছর ৪০০ টাকার কর দিয়েছেন। এবার তার হাতে ৯ হাজার টাকার নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতলবের এক বছরের ব্যবধানে কর বেড়ে গেছে ৭১ হাজার ৫০০ টাকা। একই অবস্থা প্রথম শ্রেণির লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের ২৫ হাজার হোল্ডিংধারীর। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পৌরসভার বাসিন্দারা।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সামনে এর প্রতিবাদে পৌরবাসীর ব্যানারে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। ‘মেয়র আছে ভবন নেই, কর আছে সেবা নেই’ এসব লেখা সংবলিত রঙিন কাগজের ব্যানার নিয়ে দাবি আদায়ে সড়কে দাঁড়িয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা।

মানববন্ধনে বলা হয়, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের করোনাকালীন পৌরবাসীর ওপর সীমাহীন করের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। এক মেয়াদে একবার করারোপ করার কথা থাকলেও তিনি তিনবার করেছেন। করোনাকালীন আর্থিকভাবে মানুষ খুবই অসহায় জীবন যাপন করছেন। এমন অবস্থায় নতুন করে কয়েক গুণ বাড়ানো কর পৌরবাসীর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়র নিজের ইচ্ছেমতো কয়েক গুণ ট্যাক্স বাড়িয়েছেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতলব, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর, আওয়ামী লীগ নেতা বদরুল আলম শাম্মি, যুবলীগ নেতা এহতেশাম হায়দার বাপ্পী, রেজাউল করিম জেনি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হোসেন লোটাসহ পৌসভার বিভিন্ন এলাকার দুই শতাধিক নারী-পুরুষ।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাস বলেন, আমাদের একটি সুন্দর পৌর ভবন ছিল। কিন্তু পৌর মেয়র আবু তাহের ওই স্থানে পৌর আধুনিক বিপণিবিতান তৈরি করেছেন। এখন সেখানে জুতা আর পরোটা বিক্রি হয়। মানুষ এখন পৌরভবন খুঁজে পায় না।

জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, জেলা পরিষদের প্যানেল মেয়র ফরিদা ইয়াসমিনের বাড়ির ট্যাক্স এক হাজার টাকা ছিল। তাকে ৮০ হাজার টাকার নোটিশ করা হয়েছে। একইভাবে পৌরসভার হোল্ডিংধারী সব বাসিন্দার কর বৃদ্ধি করা হয়েছে।

অস্বাভাবিক কর বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সদস্য লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরকে মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে পৌরসচিব মো. আলাউদ্দিন বলেন, পাঁচ বছর পর এখন কর পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। কাররও কোনো আপত্তি থাকলে শুনানির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। শুনানিতে নির্ধারণ করা কর সহনশীল। এতে জনগণ ক্ষুব্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ