গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের একটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, আদালতের এপিপিসহ (সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর) ১০ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চৌকি আদালতের বিচারক পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন। এর আগে বুধবার দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আলম আদালতে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর ১০ আসামি আদালতে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামীরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, মোহাম্মদ আলী সরকার, মোখলেছুর রহমান, মন্নু মিয়া, মুনমুন বেগম, নিজাম উদ্দিন, দোলেনা বেগম, নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ, তোজাম্মেল হক।

মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল উপজেলার ধরমা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিদ্যালয় কমিটি। গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের এপিপি (সহকারী পাবলিক প্রসিউকিটর) মিজানুর রহমান তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমসহ তাদের লোকজন কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও অফিশিয়াল সিল ব্যবহার করে জাল ডকুমেন্ট তৈরি করেন।

পরে নিজেরাই একই বছরের ৩০ এপ্রিল বিদ্যালয় নতুন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ঘোষণা করেন। এ ছাড়া এপিপি মিজানুর রহমান তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বানাতে এসব জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন, যা ছিল নিয়মবহির্ভূত।

এজাহারে আরও বলা হয়, এই জাল দলিল তৈরিতে এপিপি মিজানুর ও তার লোকজন উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসার, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারসহ মোট পাঁচজনের স্বাক্ষর, নিজ নিজ কার্যালয়ের সিলসহ স্মারক নম্বর তৈরি করেন। এ ছাড়া একই বছরের ২৫ জুন আগের কমিটির সদস্য, মামলার বাদী খায়রুল বারী ও পরিসংখ্যান অফিসারসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

এ ছাড়া একই দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আসামিরা পরিসংখ্যান অফিসারসহ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে। মামলায় তাদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তোলা হয়।

এ ঘটনায় একই বছরের ২৫ জুন গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল বারী পেনাল কোর্টে একটি জালিয়াতি ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। পরবর্তীতে আদালত মামলাটির তদন্তভার দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের আইনজীবী এ এস এম ফয়জুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে স্পষ্ট প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। শুনানি শেষে বিচারক মামলার ১০ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

রিপন আকন্দ/এনএ