প্রবাসীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেন সেই বিচারক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জজ আদালতের লিগ্যাল এইড শাখার সিনিয়র সহকারী জজ জাহিদুল ইসলাম জুয়েল তার দুই শিশুপুত্রকে অস্ত্র চালানো শেখাচ্ছেন- এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। পাঁচ বছর আগের ভিডিওতে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর মন্তব্য এবং পরিবারের সদস্যদের ছবি ব্যবহার করে বিভিন্ন বাজে পোস্ট করার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। 

মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন। তিনি বলেন, সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার আসামি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রবাসী নড়াইল জেলার মহিষখোলা গ্রামের নিয়াজ মাহমুদ ভিকু (৫৫)। 

বিচারক জাহিদুল ইসলাম জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২২(২), ২৩(২), ২৬(১), ২৯(১) ও ৩৫(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইনগত কর্তৃত্ব ছাড়াই আমার, আমার স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রী, ভাই-বোন ও সন্তানদের ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও ফেসবুকে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করেছেন। এই অপরাধের দায়ে নিয়াজ মাহমুদ ভিকুর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

লিগ্যাল এইড শাখার এই বিচারক আরও বলেন, গত পাঁচ মাস ধরে আমার বোনকে ম্যাসেঞ্জারে বিরক্ত করছেন নিয়াজ মাহমুদ ভিকু। আমার বোন পলি রহমানকে নানা কু-প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি না হওয়ায় আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোংরা, জঘন্য, কুরুচিপূর্ণ, মানহানিকর নানা পোস্ট করছেন। এমনকি আমার স্ত্রী, বোন, ভাইয়ের বউয়ের ছবি ব্যবহার করে চলতি মাসের ২, ৩, ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর জঘন্য পোস্ট করেন। নিজের দুটি আইডি ছাড়াও আরও কয়েকটি ফেক আইডি থেকে এ ধরনের মানহানিকর পোস্ট করছেন ভিকু।

সিনিয়র সহকারী জজ জাহিদুল ইসলাম জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও যদি আমার এমন হয়রানির শিকার হতে হয়, তাহলে জনসাধারণের অবস্থা অবশ্যই আরও করুণ। আশা করি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এর সুষ্ঠু বিচার পাব। আগামীতে এ ধরনের নোংরামি যাতে কেউ করতে না পারে, এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। 

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগে ২০১৬ সালের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নতুন করে ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, পিস্তল হাতে শিশু ছেলে। পেছনে দাঁড়িয়ে বিচারক বাবা। তিনি ছেলেকে শেখাচ্ছেন ট্রিগার চাপার কৌশল। ছেলেও একের পর এক ছুড়ছেন গুলি। বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে চারপাশ। নিজের লাইসেন্স করা দুইটি অস্ত্র ব্যবহার করে সুন্দরবন বেড়াতে গিয়ে বাচ্চারা শখ করে পিস্তল দিয়ে গুলি করেছিল বলে জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জজ আদালতের লিগ্যাল এইড শাখার সিনিয়র সহকারী জজ জাহিদুল ইসলাম জুয়েল। 

মো. জাহাঙ্গীর আলম/ওএফ