রংপুরের কাউনিয়ায় স্কুল খোলার শর্ত না মেনে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেছেন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মুখে মাস্কছাড়া পাঠদানসহ সরকারি নির্দেশনার কোনোটাই মানা হয়নি ওই বিদ্যালয়ে। এ ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের সতর্ক করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাটোয়ারীটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কারো মুখেই মাস্ক ছিল না। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিদ্যালয়টিতে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির শ্রেণিকক্ষে সহকারী এক শিক্ষক পাঠদান করছেন। সেখানে টেবিলের চারপাশ ঘিরে শিশুশিক্ষার্থীরা তাঁর কথা শুনছেন। ওই সময় শ্রেণিকক্ষে থাকা শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই মাস্কবিহীন ছিলেন। অনেকটা গাদগাদি করে কোনো সামাজিক দূরত্ব না মেনেই সেখানে পাঠদান করতে দেখা যায়।

এদিকে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন অভিভাবকেরা। তারা বলছেন, শিক্ষকদের উদাসীনতায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন করোনার ঝুঁকিতে না পড়ে সেজন্য শিক্ষা বিভাগকে বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটর করতে হবে।

বিদ্যালয়ে আসা একাধিক অভিভাবক বলেন, অনেক দিন পর স্কুল খুলে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আনন্দিত। ছোট ছোট বাচ্চাদের অনেকে মুখে মাস্ক পরে স্কুলে গিয়েছিল। আবার অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না। এসব বিষয় শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে।

পাটোয়ারীটারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের মুখে মাস্ক ছিল। কিন্তু তারা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের পর তা খুলে রেখেছিল, এটা খেয়াল করিনি। এ কারণে পাঠদানের সময় এ ঘটনা ঘটে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা করছি।    

কাউনিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ সরকার জানান, তিনি নিজে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সরকারি নির্দেশনা না মানার ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের সতর্ক করা হয়েছে।

রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এএম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, ১৯ দফা শর্ত দিয়ে স্কুল খোলার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। শর্ত অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানের সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। এসব শর্ত ঠিকভাবে মানা হচ্ছে কি না বা স্কুল খোলার পর করোনা পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে অভিযোগ পাওয়া ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর/জেএস