কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের লাইসেন্স না নিয়ে দীর্ঘ বছর চালের ব্যবসা করা যশোরের ১৬ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ১৬ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। অনুমতি পেয়ে ইতোমধ্যে তারা চাল আমদানি করতে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট-ঋণপত্র) খুলেছেন। আর এ খবরে যশোর জেলা বাজার কর্মকর্তা ১৬ আমদানিকারণকে চিঠি দিয়ে সর্তক করেছেন।

সূত্র মতে, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ সালের ১ ও ২ তফসিলের ৫,৬, ও ৭ ধারা মতে কৃষি পণ্য আমদানিকারক, রফতানিকারক, ডিলার ও মিলাররা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। কিন্তু যশোরের আমদানিকারক, রফতানিকারকরা লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করে যাচ্ছে।

যশোরের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র মতে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের লাইসেন্স না থাকা জেলার ১৬ আমদানিকারককে ১৬ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির বরাদ্দের অনুমতি দিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সংগ্রহ শাখা থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়। ওই ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে চাল আমদানি করেছে। কিন্তু তাদের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেই। তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

নোটিশ পাওয়া ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, যশোর সদরের চুড়ামনকাটির গোলদার এন্টারপ্রাইজ, অভয়নগরের নওয়াপড়া স্টেশন বাজারের এপি ট্রেডিং, আসিফ ট্রেডার্স, লাকী এন্টারপ্রাইজ, আহম্মদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, বাবর ইন্টারন্যাশনাল, শার্শার নাভারন রেল বাজারের নাসিম এন্টারপ্রাইজ, নাভারন পুরাতন বাজারের ইসলামপুর রাইস মিল, বেনাপোলের এসএমএম ইন্টারন্যাশনাল, হাজী মোছা করিম এন্ড সন্স, সততা ফিশ, সততা ফিশ ফিড, টিএম ফিড মিল, শ্যামলাগাছির চৌধুরী অটো রাইস মিল, ঝিকরগাছার ইসমাইল মিলন এবং এসএ এন্টারপ্রাইজ। 
 
সূত্র মতে, ঊর্ধ্বতন মহল এ নির্দেশ দেয়ায় আপাতত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে না গিয়ে লাইসেন্স নিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে আমদানি চালের পরিমাণ ও ক্রয়মূল, বিক্রয় চালান ও মজুদ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া আমদানি শুল্ক ছাড়ের পরিমাণ, লাইসেন্স, বিক্রয়মূল্য, পরিবহন ও বাজারজাত খরচসহ অন্যান্য কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে।

জেলার শার্শার নাভারন বাজারে ব্যবসা করা আমদানিকারক আসিফ ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আসিফ হোসেন জানান, তারা চিঠি পেয়েছেন। লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ১ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। ইতোমধ্যে ৩শ মেট্রিন টনের এলসি খুলেছেন। একদিকে চাল আমদানির জন্য চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে কাগজপত্রও ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন। বিনা লাইসেন্সে কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন, আইন অনুযায়ী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া তারা ব্যবসা করতে পারেন না। কিন্তু নিয়ম কানুন না জানা ও অন্যান্য দপ্তরের অসহযোগিতার কারণে ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে গেছেন।

জাহিদ হাসান/এমএএস