ভুক্তভোগী হবিরন বেগম

শেরপুরে কথিত জিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে জমানো সব টাকা হারিয়ে হবিরন বেগম (৫০) নামে এক নারী সর্বস্বান্ত হয়েছেন। তিনি নকলা উপজেলার বানেশ্বরদী গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় ওই নারী সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নকলা থানায় অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান।

ভুক্তভোগী হবিরন বেগম জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে তার নিজস্ব মোবাইলে একটি ফোনে আসে। অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি সালাম জানিয়ে নিজেকে জিনের বাদশা পরিচয় দেন। এরপর তার পরিবারের খোঁজখবর নেন। তিনি হবিরনকে বলেন, ‘আপনি ভাগ্যবতী, তবে আপনার ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সবার জন্য বড়  বিপদ অপেক্ষা করছে । এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে হলে জিনের মাধ্যমে সামান্য কিছু টাকার চালান দিতে হবে। এই টাকায় জিনের মাধ্যমেই মসজিদের ইমামের জন্য একটি জায়নামাজ কেনা হবে। এতে আপাতত ৭০০ টাকা লাগবে। যদি কোনো কারণে টাকা দিতে অস্বীকার করেন তবে পরিবারের যে কেউ মারাও যেতে পারে।’ 

হবিরন বেগম বলেন, সেসময় আমি ভয় পেয়ে জিনের বাদশার দেওয়া একটি বিকাশ নম্বরে ৭০০ টাকা পাঠিয়ে দেই। যা আমার পরিবারের অন্য কোনো সদস্য জানতো না। এরপর থেকে ওই প্রতারক প্রায় প্রতি রাতেই আমার পরিবারের খোঁজখবর নিত। তার কথামত চলার নির্দেশ দিত। তার আশা পূরণ করতে পারলে সে আমাকে গুপ্তধনের খোঁজ দেবে এমনটিও বলতো। একপর্যায়ে আবেগের বশে কথিত জিনের বাদশা কথা অনুযায়ী কাউকে না জানিয়ে তার দেওয়া বিকাশ নম্বরে চার ধাপে মোট ৮০ হাজার ৭০০ টাকা পাঠিয়ে দেই। এখন আমি বুঝতে পারছি আমি ঠকেছি। আজ সর্বস্বান্ত হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।

হবিরন বেগমের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পরিবারের সকলের কষ্টে জমানো ছিল ওই টাকাগুলো। বর্তমানে আমার মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। আমরা চাই তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ যেন দ্রুত ওই প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করে। 

এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, ভুক্তভোগী হবিরন থানায় অভিযোগ করেছেন। কথিত জিনের বাদশা হচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এরা রাতের গভীরে একসঙ্গে বসে ২০ থেকে ৩০টি সিম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সঙ্গে প্রতারণা করে। এই প্রতারক চক্রকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জাহিদুল খান সৌরভ/আরএআর