সতিনদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন মাজেদা বেগম

বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মাজেদা বেগম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার জয়ের জন্য দিনরাত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন অন্য দুই সতিন। মাজেদা বেগম ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর। এবার আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তিনি। 

তিন সতিন ও স্বামী একসঙ্গে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সবখানে এখন তিন সতিনের আলোচনা।

বয়েলগাড়ি গ্রামের ভোটার শিপন বলেন, বর্তমান সময়ে সতিনদের মধ্যে মুখ দেখাদেখিও হয় না। অথচ এক সতিনের জয়ের জন্য দুই সতিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সতিনের জয়ের জন্য সতিনের ভোট চাওয়ার বিষয়টি বিরল।

কানুপুর গ্রামের ভোটার মো. শামীম, আফজাল ও তারেক জানান, মাজেদা বেগম ৪, ৫ ও ৬ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে আনারস প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদিন ভোরে তিন সতিন মিনু বেগম, রেনু বেগম ও মাজেদা বেগম স্বামী আব্দুস সামাদকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন। গভীর রাত পর্যন্ত জয়ের আশায় ওয়ার্ডের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটে বেড়ান।

বন্তেঘরী গ্রামের ভোটার মাইনুল, হারুন, গোলাপি ও আঙ্গুর বলেন, সতিন মানেই যে খারাপ তা কিন্তু নয়; আব্দুস সামাদের স্ত্রীরা সেটি প্রমাণ করেছেন। তিন সতিনের প্রচারণা ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ এনে দিয়েছে। মাজেদা বেগম এখন পৌরসভার আলোচিত প্রার্থী। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যাচ্ছে, মাজেদা বেগমই জয়লাভ করবেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আব্দুস সামাদের পাঁচ স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী রাহেলা বেগম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, দ্বিতীয় স্ত্রী ডলি বেগম মারা গেছেন, তৃতীয় স্ত্রী মাজেদা বেগম কাউন্সিলর প্রার্থী, চতুর্থ স্ত্রী মিনু বেগম ও পঞ্চম স্ত্রী রেনু বেগম গৃহিণী।

মাজেদা বেগম বর্তমানে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছেন। গতবারও একইভাবে প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের মন জয় করেছিলেন তারা।

আব্দুস সামাদের স্ত্রী রেনু বেগম বলেন, আমাদের আলাদা আলাদা হাঁড়ি। কিন্তু সবাই বোনের মতো। শুধু ভোট নয়, সুখে-দুঃখে আমরা একে-অন্যের পাশে দাঁড়াই।

মাজেদা বেগম বলেন, সতিন মানেই শত্রু মনে করা হয়। কিন্তু আমি সৌভাগ্যবান। সতিনরা আমার কাছে বোন। অতি আপনজন। নির্বাচিত হলে এলাকায় নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখব।

আব্দুস সামাদ বলেন, আমার স্ত্রীদের নিয়ে আমি খুশি। তারা সব সমস্যা মিলেমিশে মানিয়ে নিতে পারে। তাদের এই মধুর সম্পর্কের কথা ভোটাররা জানতে পেরে সবাই খুশি।

এএম