ফজলে হোসেন বাদশা

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, এখন মুক্তিযুদ্ধের সফলতাকে গ্রাস করছে দুর্নীতি। এটি করোনার চেয়েও খারাপ। পুরো জাতিকে শেষ করে দিচ্ছে। 

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর সাহেববাজার বড় মসজিদ চত্বরে ব্রিগেড সমাবেশে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শহীদ জামিল ব্রিগেড’ এর সেবামূলক কর্মকাণ্ডের শততম দিন উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। 

ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীতে করোনা মোকাবিলায় জামিল ব্রিগেড যেমন সফল হয়েছে, তেমনি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ব্রিগেডের সদস্যদের কাজ করতে হবে। তবেই না আমাদের অগ্রগতি হবে।

তিনি আরও বলেন, একদিন ফেসবুকে দেখলাম- ব্রিগেডের সদস্যরা একজন করোনা রোগীকে কোলে করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলছে। ফোন করে জানতে পারলাম, ওই রোগীর আত্মীয়-স্বজন পাশেই ছিলেন। কিন্তু করোনা রোগীর পাশে যাননি কেউ। তাই ব্রিগেডের সদস্যরা ওই রোগীকে কোলে করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলেছে। করোনা রোগীকেও ব্রিগেডের সদস্যরা তাদের নিজের আত্মীয়-স্বজন মনে করেছে।

ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এই করোনাকালে আমিও শত শত মানুষকে মাস্ক পরিয়ে দিয়েছি। আমি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। আমার জন্য ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার এসেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো অ্যাম্বুলেন্সও পায় না। তাই জামিল ব্রিগেডের মাধ্যমে আমরা অ্যাম্বুলেন্স সেবাও দিয়েছি। আমরা সকল মানুষের কথা চিন্তা করে রাজনীতি করি, শুধু নিজেদের জন্য নয়।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় জামায়াত-শিবিরের হাতে নিহত রাজশাহী মেডিকেল কলেজের  শিক্ষার্থী ডা. জামিল আক্তার রতনের নামানুসারে গঠন করা হয় শহীদ জামিল ব্রিগেড। 

ছাত্রমৈত্রীর ওই নেতাকে স্মরণ করে রাকসুর সাবেক ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ৩১ জন শিক্ষকের সামনে প্রকাশ্যে জামায়াত-শিবির ডা. জামিল আক্তার রতনকে হত্যা করেছিল। সেই জামিলের কবরে প্রথম ফুল দিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহীদ জামিলের মতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সৈনিকরা না থাকলে জামায়াত-বিএনপিকে উৎখাত করে এই সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হতো না। তাই মনে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না। চক্রান্তকারীদের সঙ্গে কোনো আপস নেই।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু। জামিল ব্রিগেডের প্রধান সমন্বয়ক দেবাশিষ প্রমাণিক দেবুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন শহীদ রাসেল বিগ্রেডের ঢাকার প্রধান সমন্বয়ক সাদাকাত হোসেন বাবুল, নাট্যকার অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও জামিল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আরিফুল হক কুমার প্রমুখ।

সমাবেশে জানানো হয়, করোনা সচেতনতায় জামিল ব্রিগেডের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দুই লাখ পিস মাস্ক এবং আড়াই লাখ সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। করোনা রোগীদের ২৪ ঘণ্টা সেবা দিচ্ছে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স। ৫০টি সিলিন্ডারের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দেওয়া হচ্ছে। 

এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭০০ মানুষকে বিনামূল্যে করোনার টিকার জন্য অনলাইনে নাম নিবন্ধন করে দিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি চারজন চিকিৎসকের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা দিচ্ছে। করোনায় মৃতদের দাফন এবং সৎকারেও সহায়তা করে আসছেন ব্রিগেডের সদস্যরা। সংগঠনের মানবিক এই কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর