গাজীখালি নদীতে ড্রেজার, কৃষকের আর্তনাদেও নীরব প্রশাসন
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও ঢাকার ধামরাই উপজেলার গাজীখালি নদীর বারবারিয়া এলাকায় ড্রেজার বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন আব্দুস সাত্তার নামের এক ব্যক্তি। এতে হুমকিতে রয়েছে বারবারিয়া শ্মশানঘাটসহ কয়েক একর ফসলি জমি।
তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মন্তব্য করে জানান, বিষয়টি মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েও কোনো সমাধান হয়নি।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবারিয়া এলাকায় ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়। বারবারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনের অংশে ওই বালুর ভিটি তৈরি করছেন বালু ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
ড্রেজারে কাজে বালু উত্তোলনে ব্যস্ত শ্রমিক ইউনুস মিয়াকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, প্রায় সপ্তাহখানেক আগে গাজীখালি নদীতে ড্রেজার বসানো হয়। তারা সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। নদী থেকে বালু তুলে রাস্তার পাশে ভিটি করে বালু জমাট করে রাখা হয়। পরে তা বিক্রি করেন মালিকপক্ষের নিয়োজিত লোকজন।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারবারিয়া এলাকার একাধিক কৃষক বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে তাদের ফসলি জমি। বিষয়টি মৌখিকভাবে ড্রেজার ব্যবসায়ীদের জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বরং এসব বিষয়ে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি করলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সাত্তারের লোকজন। সব সময়ই ড্রেজার দেখাশোনার জন্য সাত-আটজন লোক ড্রেজারের আশপাশে থাকে বলে জানান কৃষকেরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড্রেজার ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার বলেন, নদী খনন প্রকল্পের আওতায় নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন তিনি। তার সঙ্গে আরও দুই ব্যবসায়ী রয়েছেন। মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মবিনুর রহমান তাকে নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে বলেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী মো. মবিনুর রহমান বলেন, নদী খননের প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ৭ জুলাই সমাপ্ত হয়ে গেছে। সেখানে নদী খননের প্রকল্পের জন্য নদী থেকে মাটি বা বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি পুরোটাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাম ভাঙানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি মুঠোফোনে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে মুঠোফোনে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার আব্দুস সাত্তারকে নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে দুপক্ষই তোয়াক্কা না করেই অবাধে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে বলে জানান তিনি।
ড্রেজারের বিষয়ে জানতে চাইলে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, গাজীখালি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই এ বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সোহেল হোসেন/এনএ