রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে পাহাড়ের ঢাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশের গুলব্দ্ধি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের প্রায় দশ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে তার মৃতদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন খান।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে উপজেলার দুর্গম বঙ্গলতলি ইউনিয়নের বি ব্লক এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সুরেশ সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে দাবি করেছে স্থানীয় একাধিক সূত্র।

তবে তিনি সংগঠনটির কোনো দায়িত্ব পালন করছেন কি না, সেই সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি তারা, এমনকি এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানায়নি তার সংগঠন জনসংহতি সমিতিও।

একাধিক সূত্র বলছে, সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশ মূল জনসংহতি সমিতি’র অনেক পুরোনো কর্মী এবং সাবেক গেরিলা সংগঠন শান্তিবাহিনীর সদস্য। তিনি বিভিন্ন সময়ে সাংগঠনিক নানান দায়িত্ব পালন করেছেন।

সর্বশেষ তিনি উপজেলা কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সংগঠনটির বিচার কমিটির উপজেলা প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। সুরেশ তার নিজের বাড়িতে নয়, বাড়ির কাছেই এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রাতযাপনকালেই গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

প্রাণনাশের ভয়ে তিনি নিজ বাড়ির বাইরে রাত্রিযাপন করতেন বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো। এদিকে সকালে হত্যার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাশেরও হদিস পায়নি আইনশৃংখলাবাহিনী। আইনশৃংখলাবাহিনী ধারণা করছে, তারা পৌঁছানোর আগেই লাশ সরিয়ে নেওয়া হয়।

দীর্ঘসময় খোঁজাখুঁজির পর বিকের পৌনে ৪টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তবে বিকেল পর্যন্ত এই বিষয়ে মুখ খোলেনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। সংগঠনটির দায়িত্বশীল কোনো নেতাই ফোনও ধরছেন না। অন্যান্য ঘটনায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বিবৃতি পাঠানো হলেও এই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিবৃতি পাঠায়নি সংগঠনটি।

তবে সংগঠনটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) কেন্দ্রীয় কমিটির সহতথ্য ও প্রচার সম্পাদক জুপিটার চাকমা জানিয়েছেন, তাদের নিজেদের আভ্যন্তরীণ বিবাদে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে জেনেছি।

ওই এলাকাটি সম্পূর্ণই জনসংহতির ঘনিষ্ঠ সংগঠন ইউপিডিএফ এর নিয়ন্ত্রণাধীন। সেখানে আমাদের প্রবেশ করাও কঠিন। তারা নিজেরাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে।

মিশু মল্লিক/এমএসআর