লাখো মানুষের ঢলে পাবনায় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ শুরু
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল স্মৃতি স্মরণে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ইছামতি নদীতে শুরু হয়েছে ১০ দিনব্যাপী গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। জেলা ও জেলার বাহির থেকে প্রায় ২০টি দল এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে।
সাঁথিয়া পৌরসভার উদ্যোগে (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক টুকু।
বিজ্ঞাপন
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য বলেন, নৌকাবাইচ আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মূল অনুষঙ্গ। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। এতে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পান। ধারাবাহিকতা রক্ষা করে প্রতিবছরই ইছামতি নদীতে নৌকাবাইচ আয়োজনে সম্পৃক্ত থাকার ঘোষণা দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, যার স্মরণে আজকের এই আয়োজন, তিনি বেঁচে থাকলে দেশ আরও উন্নত শিখরে পৌঁছে যেত। সমৃদ্ধ হতো দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অঙ্গন। যদিও তিনি আমাদের মাঝে নেই, তবু কোটি মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে তার দর্শন।
আয়োজকরা জানান, বর্ষার শেষ দিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রতিবছরই এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে করোনা মহামারির কারণে গত বছর এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়নি। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবারের এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছন সাঁথিয়া পৌরসভা।
আর এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে স্থানীয়রাসহ আশপাশের গ্রাম ও জেলার সাধারণ মানুষ এসেছেন নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১০টি নৌকা ও জেলার বাহির থেকে আরও ১০টি নৌকা এটই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করেছে। ছন্দের তালে বাহারি পোশাকে গানের তালে নৌকা নিয়ে আসেন প্রতিযোগীরা।
শুধু জেলার মধ্যেই নয়, তারা বাইরের জেলাতেই অংশগ্রহণ করে থাকেন। প্রতিটি নৌকাতে ৬০ জন করে মাল্লার ও দুজন ছন্দের লোক একজন মাঝি দোয়া-কালাম পড়ে উঠে পড়েন নৌকায়। দুপুর থেকে তারা নদীতে নৌকা নিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিতে থাকেন। নদীর পূর্ব পাড়ে প্রায় দুই কিমি দূর থেকে পশ্চিশ পাড়ের মঞ্চ প্রাঙ্গণে আসতে হয় প্রতিটি নৌকাকে।
উদ্বোধনী দিনে ভাই ভাই এক্সপ্রেস বনাম সরদার এক্সপ্রেস অংশ নেয়। পরবর্তীতে হুইখালী এক্সপ্রেস বনাম বাগচী চ্যালেঞ্জার, এরপর ইছামতি এক্সপ্রেস বনাম সলঙ্গি এক্সপ্রেস এবং দিনের শেষে মায়ের দোয়া এক্সপ্রেস বনাম শেরে বাংলা এক্সপ্রেস প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে চাটমোহর, ভাঙ্গুরা, ফরিদপুর, সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলা নৌকা রয়েছে। এ ছাড়া জেলার বাইরে সিরাজগঞ্জ, উল্লাপাড়া, নাটোর, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে।
প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। পয়েন্ট-ভিত্তিক এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত হবে।
রাকিব হাসনাত/এনএ