কুমিল্লার মুরাদনগরে দাফনের ৯ মাস পর গৃহবধূর শাহিনুর আক্তারের (২৫) লাশ আদালতের নির্দেশে উত্তোলন করা হয়েছে। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিনের উপস্থিতিতে দক্ষিণ ত্রিশ কবরস্থান থেকে পুলিশ ওই লাশ উত্তোলন করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদেকুর রহমান।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি শাহিনুর আক্তার তার স্বামীর বাড়িতে মারা যায়। পরিবারকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে জানানো হয়। তখন তড়িঘড়ি করে তার লাশ দাফন করা হয়।

বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে নিহতের ভাই মামুন খান বাদী হয়ে কুমিল্লার আমলি আদালতে মামলা করেন। মামলায় শাহিনুরের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ফলে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়।

নিহতের ভাই মামুন খান জানান, লাশ দাফনের পর জানতে পারি আমার বোনের গলায় ও শরীরের একাধিক স্থানে কালো দাগ দেখা গেছে। যৌতুকের জন্য প্রায় সময় নির্যাতন করত। গভীর রাতে বোনকে তার স্বামী এনামুল পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

নিহতের স্বামী এনামুল মিয়া জানান, শাহিনুর ডায়বেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত ছিল। তার শরীর মাঝে মাঝে নীল হয়ে যেত। ওই দিন রাতে অসুস্থতার কথা তার পরিবারকে জানানো হয়। তখন কেউ আসেনি। রাতেই তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাদের সম্মতিতে লাশ দাফন করা হয়। এখন মামলা দিয়ে আমি এবং আমার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।

মুরাদনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান জানান, আদালতের নির্দেশনায় শাহিনুর আক্তারের লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, নিহত শাহিনুর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের আলী আজ্জম খানের মেয়ে। ৭ বছর আগে দক্ষিণ ত্রিশ গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে এনামুল মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে শাহিনুর আক্তারের বিয়ে হয়। শাহিনুরের ৫ বছর বয়সী কন্যাসন্তান রয়েছে।

অমিত মজুমদার/এমএসআর