ইভ্যালির ওয়্যারহাউজ থেকে কার্টনভর্তি মোবাইল সরিয়ে বিক্রির অভিযোগ
একে একে ফাঁস হচ্ছে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির গোমর। ইতোমধ্যে প্রতারণার অভিযোগে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী (চেয়ারম্যান) শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতার করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আর এই সুযোগে ইভ্যালির কিছু কর্মকর্তা ওয়্যারহাউজ থেকে রাতারাতি বেশ কিছু মোবাইল ফোনসেটভর্তি কার্টন ও মালামাল সরিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সাভারের বলিয়ারপুর ওয়্যারহাউজ থেকে সরিয়ে নেওয়া প্রায় ৫০০ মোবাইল ফোন বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব মোবাইল ফোন সাভারের বিভিন্ন ডিলারের কাছে বলিয়ারপুর ওয়্যারহাউজের প্যাকেজিং কর্মকর্তা মোজাম্মেল বিক্রি করেছেন বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, সাভারের বলিয়ারপুরে ইভ্যালির ওয়্যারহাউজ থেকে ইভ্যালি ভোক্তাদের বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করতো। সেখানে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন পণ্য মজুদ ছিল ইভ্যালির।
বলিয়ারপুর ওয়্যারহাউজে মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। প্যাকেজিং সেকশন ও স্টোর ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন মো. মোজাম্মেল। এছাড়া আনোয়ার আতিক, সাবরিনা ও হাসান নামের তিনজন কর্মী ছিলেন সেখানে।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে সাভারের বলিয়ারপুরে ইভ্যালির ওয়্যারহাউজ থেকে কার্টনভর্তি মোবাইলসেট ও মালামাল সরিয়ে নেন মোজাম্মেল। সেসব তিনি তার শ্বশুরবাড়ি হেমায়েতপুরের বাগবাড়িতে নিয়ে মজুদ করেন।
শনিবার এ বিষয়ে মোজাম্মেল বলেন, আমরা কিছু মোবাইল ওয়্যারহাউজ থেকে বের করে বাসায় নিয়ে আসি। সেগুলো বাসা থেকে ডেলিভারি করার কথা রয়েছে।
এদিকে, ওয়্যারহাউজ থেকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার খবর পেয়ে আহাদ নামের এক গ্রাহক হেমায়েতপুরের বাগবাড়িতে মোজাম্মেলের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মোবাইলফোন দেখতে পান বলে দাবি করেছেন।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমি ইভ্যালিতে মোটরসাইকেল অর্ডার করেছিলাম। তাই ওয়্যারহাউজ থেকে মালামাল সরানোর খবর পেয়ে মোজাম্মেলের শ্বশুরবাড়ি যাই। সেখানে কার্টনভর্তি আইফোন, রিয়েলমি, অ্যাপলসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় ৬০০ মোবাইলসেট দেখেছি। মোজাম্মেল বাইকের জন্য ইভ্যালিকে আমি যে টাকা দিয়েছি সেই টাকার সমপরিমাণ ফোন আমাকে দিতে চেয়েছিলেন। এজন্য জাহাঙ্গীর নামের তার শ্যালকের ফোন নাম্বার দিয়ে আজ যেতে বলেন। কিন্তু জাহাঙ্গীর সাভার স্ট্যান্ড, ওয়্যারহাউজসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা করতে চেয়ে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। সবশেষে দেখা হলে তিনি বলেন, ইভ্যালির তিনি কেউ না। এই ফাঁকে মোজাম্মেল সব মোবাইল বিক্রি করে সটকে পড়েছেন।
রোববার মোজাম্মেলের বাসায় গিয়ে ইভ্যালির মোবাইল কিংবা কোনো পণ্য দেখতে পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে মোজাম্মেলের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে তার স্ত্রী মোনালিসা মোমো বলেন, ওয়্যারহাউজ থেকে আনা মোবাইলগুলো আবার ওয়্যারহাউজে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ইভ্যালির ওয়্যারহাউজ থেকে মোট পাঁচশ মোবাইলফোন কিনেছি। তবে মোজাম্মেলই তার কাছে ফোন হস্তান্তর করেছেন কি না তা নিশ্চিত করেননি এই ক্রেতা।
এইচকে