পেশায় কাঠমিস্ত্রি। পড়াশোনা বাদ দিয়েছেন অনেক বছর আগে। শিক্ষাগত যোগ্যতায় সর্বশেষ চতুর্থ শ্রেণি। নাজিরপুর সদর ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন একটি দোকানে শ্রমিক হিসেবে নিয়মিত কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এমন যুবক জাহিদুল খান টনিকে করা হয়েছে জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।

তিনি স্থানীয় মো. আনছার আলী খানের ছেলে। এ ঘটনায় নাজিরপুরসহ জেলা ব্যাপী সংগঠনের পদবঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার চলছে।

জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলা ছাত্রদলের ৩৪৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় কমিটি। সেখানে এমন অছাত্র, ব্যবসায়ী, বিবাহিতসহ অনেককেই পদ দেয়ায় যোগ্যরা পদ পায়নি।

নাজিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. শামিম হাওলাদার জানান, জাহিদুল ইসলাম খান টনি কখনো ছাত্রদল করেননি। তাকে ছাত্রদলের কোনো মিটিং-মিছিলে দেখা যায়নি। জেলা কমিটি আমাদের (উপজেলা) সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই কয়েকজনকে পদ দিয়েছেন। এতে প্রকৃত ছাত্রদলের কর্মীরা পদ বঞ্চিত হয়েছেন। এতে গার্মেন্টসকর্মী নজিরপুরের উজ্জ্বল হালদার এবং এনজিওকর্মী এসএম শরীফুল ইসলামকে যথাক্রমে দেয়া হয়েছে গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সহ-সাধারণ সম্পাদকের পদ।

এ ব্যাপারে জানতে জাহিদুল ইসলাম খান টনির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তাকে কি কারণে পদ দেয়া হয়েছে তা তিনি জানেন না। তিনি বিএনপিকে মনে-প্রাণে ভালোবাসেন। তবে তার থেকেও অনেক অযোগ্যদের পদ দেয়া হয়েছে বলে দাবি তার।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান শেখ রুবেল জানান, দলের নারীদের ৩০ শতাংশ কোঠা আছে। বাইরের কেউ হামলা মামলার ভয়ে দল করতে চায় না। সেই জায়গা থেকে আমরা আমাদের স্ত্রী ও বোনদের দিয়ে দলে নারী কোঠার অর্ধেক পূর্ণ করেছি। জেলা কমিটি সব নাম দেয় নাই। অনেক সাবেক নেতার দেয়া তালিকা থেকে অনেকেই দলে প্রবেশ করেছে। কমিটির বেশিরভাগই কর্মঠ (ছাত্র, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবি ও প্রবাসী) যারা বিগত দিনে আন্দোলন করেছে। আমরা তাদের একটা পরিচিতি দিয়েছি মাত্র এই কমিটির মাধ্যমে।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আল মামুন জানান, কমিটি ভালো হয়েছে। তবে অনেক বছর পরে নতুন এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। তাই বিভিন্ন জায়গার সুপারিশে বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন লোক কমিটিতে ঢুকেছে। কিছু জায়গায় জটিলতা আছে। সকলের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। অযোগ্য হলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আবীর হাসান/এমএএস