যৌতুক না পেয়ে গভীর রাতে উচ্চ স্বরে সাউন্ডবক্সে ওয়াজ বাজিয়ে নির্যাতনের পর স্ত্রীর (২১) শরীরে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মাওলানা শরিফ মাহমুদ নামের এক মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে। 

গত শনিবার রাত ৩টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার নতুনবাজারের আনছার রোড এলাকার বয়রাসালায় এ ঘটনা ঘটে। পরে গৃহবধূর বাবা হাসেন আলী বাদী হয়ে বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নে। তিনি তার স্বামী মাওলানা শরিফ মাহমুদের সঙ্গে বয়রাসালায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। শরিফ স্থানীয় ইয়াকুব আলী জামে মসজিদে মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন।

গৃহবধূর পরিবার জানায়, পারিবারিকভাবে ২০১৯ সালের ১২ জুন গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় এলাকায় মাওলানা শরিফ মাহমুদের সাথে বিয়ে হয় গৃহবধূর। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীপুরে গিয়ে বসবাস করেন শরিফ। সেখানে স্থানীয় ইয়াকুব আলী জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন তিনি।

কিন্তু আর্থিক অনটন ও পরকীয়ায় লিপ্ত শরিফ কিছুদিন ধরে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। গত শনিবার রাতে স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শরিফ। এ সময় স্ত্রী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এবং পরকীয়ার বিষয়ে বললে তাকে মারপিট শুরু করেন শরিফ।

এরপর রাত ৩টার দিকে উচ্চ স্বরে সাউন্ডবক্সে ওয়াজ বাজিয়ে স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। পরে স্ত্রীর চিৎকারে পাশের রুমের এক নারী এসে প্রতিবেশীদের ডেকে এনে তাকে উদ্ধার করেন।

খবর পেয়ে ঘটনার রাতেই গাইবান্ধা থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায় তার পরিবার। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছে, আগুনে রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। তার নাভির নিচ থেকে পা পর্যন্ত বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া বুকের কিছু অংশ পুড়েছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত রয়েছেন। তবে সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবে।

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিপন আকন্দ/এনএ