মৌলভীবাজারে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রায় ২৫ বছর পর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে লাশ হলেন ফরজান খাঁন (৬০) নামে এক ব্যক্তি। সোমাবর (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষারে বাড়ির পাশের সবজিক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের দুই ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

নিহত ফরজান খাঁন কুলাউড়া থানার টিলাগাঁও ইউনিয়নের বিজলি গ্রামের মৃত রশিদ খানের ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে পতনঊষারের টিলাগড় গ্রামের ছমসুন বেগমের সঙ্গে ফরজান খাঁনের বিয়ে হয়। স্বামী ফরজান খাঁন বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে এ নিয়ে সংসারে কলহের সৃষ্টি হয়। এর জেরে বিয়ের ৫ বছরের মাথায় তাদের বিচ্ছেদ হয়। তখন থেকে ছমসুন বেগম তাদের সংসারের তিন সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি পতনঊষারে টিলাগড় গ্রামে চলে যান। এদিকে বিচ্ছেদের পর ফরজান দ্বিতীয় বিয়ে করেন কমলগঞ্জের আদমপুর ইউনিয়নের ছনগাঁও গ্রামে। সন্তানদের দেখতে প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে যেতেন ফরজান।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে- রোববার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় ফরজান শ্বশুরবাড়ি আসার পর তাকে হত্যা করা হয়। পরে বাড়ির পেছনের সবজিক্ষেতে তার মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়। মরদেহ উদ্ধারের সময় নিহতের গায়ে সাদা গেঞ্জি ও আকাশি রঙের ফুল শার্ট ও লুঙ্গি পরা ছিল। নিহতের শরীরের কোথাও আঘাতের আলামত পাওয়া না গেলেও মাথায় এবং গেঞ্জিতে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। 

পতনঊষার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক আহমেদ বাবু বলেন, সকালে খবর পেয়ে বিষয়টি থানায় জানাই। পরে সবজিক্ষেত থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোশাররফ হোসেন জানান, সকালে সবজিক্ষেতে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশ থেকে ধান কাটার কাঁচি, কাপড়ের ব্যাগ, মোবাইল ফোন, নগদ ২০ টাকা ও বিড়ি পাওয়া গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। নিহত ফরজান খাঁনের ছেলে সোহেল (২৫) ও শাহিনকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

ওমর ফারুক নাঈম/আরএআর