দুর্বৃত্তদের গুলিতে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ ৫ নেতার একজন মুহিবুল্লাহ (৫০) নিহত হয়েছেন। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপরই তার মরদেহ লম্বাশিয়া ক্যাম্পের বাড়িতে আনা হয়। সেখানে রোহিঙ্গারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রিয় নেতাকে হারিয়ে নির্বাক সাধারণ রোহিঙ্গারা। একই সঙ্গে তার হত্যাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসিতে ঝুলানোর দাবি তুলেছেন তারা।

রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, দ্বিতীয় মুহিবুল্লাহ আমরা আর কখনো পাবো কীনা জানি না। তবে কেন কারা তাকে হত্যা করেছে তা জানতে ইচ্ছে করছে। কারণ তারা কিসের স্বার্থে কাদের স্বার্থে এ জঘন্য হত্যাযজ্ঞে জড়িয়েছে। যে রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছে নি:স্বার্থভাবে কাজ করেছেন।

রোহিঙ্গা সালেহ আহমেদ বলেন, মাস্টার মুহিবুল্লার অবদান কখনো ভুলতে পারবে না রোহিঙ্গারা। যে আমাদের অধিকারের জন্য লড়ে গেছে। তাকেই যারা হত্যা করেছে তাদের গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। দাবি জানাচ্ছি।

মুহিবুল্লার ছোট ভাই হাবিব উল্লা জানান, সশস্ত্র গ্রুপটিতে মাস্টার আব্দুর রহিম ছাড়াও ছিলেন মুর্শিদ, লালুর নেতৃত্বাধীন ২০ জনের সশস্ত্র গ্রুপ। যাদের তিনি আল ইয়াকিনের সদস্য বলে দাবি করেছেন।

তিনি আরও দাবি করেন, যারা এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের শাস্তি চান তারা। শুধুমাত্র রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে লম্বাশিয়া মসজিদে নিহত মুহিবুল্লার জানাজা শেষ হয়েছে। তার বাড়ির পাশে কবরস্থানে তাকে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এর আগে, উখিয়ার কুতুপালং ১নং ক্যাম্পের ডি-ব্লকে এশার নামাজের পর নিজ অফিসে অবস্থানকালে অজ্ঞাতনামা বন্ধুকধারীরা মোট ৫ রাউন্ড গুলি করলে তিন রাউন্ড গুলি মুহিবুল্লাহর বুকে লাগে এবং উক্ত গুলিতে তার মৃত্যু হয়।

নিহত মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের মধ্যে জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলার জন্য তিনি জাতিসংঘে গিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও সাক্ষাত করেছিলেন। রোহিঙ্গাদের অধিকার দিয়ে তিনি সব সময় বিদেশি বিভিন্ন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে আসছিলেন। তার মৃত্যুতে লোকজনের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

মহিব/এমএএস