‘পরিবারের সবার ছোট আমেনাকে নিয়ে আদরের শেষ ছিল না। গোসল করতে যাওয়ার সময় আমার কোলে চড়ে বেশ কয়েকবার চুমু দিয়েছে। এই চুমুই যে শেষ চুমু তা জানা ছিল না।’

তিন বছরের ছোট্ট মেয়েকে হারিয়ে কথাগুলো বলছিলেন দিশেহারা পিতা আব্দুর রহিম। 

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আব্দুর রহিমের অসাবধানতায় কাপ্তাই হ্রদে পানিতে ডুবে মারা যায় ছোট্ট আমেনা। রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনীমূখ ইউনিয়নের মৌজালি টিলা গ্রামে এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশু আমেনার মা বাড়িতে ছিলেন না। তাকে নিয়ে বাড়ির পাশে কাপ্তাই হ্রদে গোসল করতে যান পিতা আব্দুর রহিম। এমন সময় মোবাইল ফোনে কল আসে। মেয়েকে ঘাটে বসিয়ে রেখে ফোনে কথা বলতে থাকেন আব্দুর রহিম। ফোনে ব্যস্ত থাকার সুযোগে শিশুটি পানিতে নেমে যায়। মুহূর্তেই পানিতে ডুবে যায় সে। কিছুক্ষণ পর আব্দুর রহিম ঘাটে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে হ্রদ থেকে আমেনার নিথর দেহ উদ্ধার করে লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সামান্য অসাবধানতায় আমেনাকে হারিয়ে শোক নেমে এসেছে আব্দুর রহিমের পরিবারে। 

এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অরবিন্দ চাকমা বলেন, প্রতি বছর কাপ্তাই লেকে পানি বাড়লে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধি পায়। এই সময়টাতে শিশুদের প্রতি বেশি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। শিশুদের এমন অকাল মৃত্যু রোধে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।

মিশু মল্লিক/এইচকে