টাঙ্গাইলের নাগরপুরে কালভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার এক বছর পরও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ হয়নি। ফলে কালভার্টে উঠতে মানুষকে ব্যবহার করতে হচ্ছে বাঁশের খুঁটি বা সাঁকো। 

উপজেলার তেবাড়িয়া-দপ্তিয়র-কদিম কাটনা এলাকার কালভার্টও একইভাবে পার হচ্ছেন তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। ফলে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, বন্যা ও করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন থাকায় কালভার্টের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের তেবাড়িয়া-দপ্তিয়র-কদিম কাটনার নবনির্মিত কালভার্টে উঠতে উভয় পাশে বাঁশের খুঁটি বা সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। একটি বাঁশ দিয়ে কোনো রকমে কালভার্টে ওঠা হচ্ছে। 

জানা গেছে, কালভার্টের অ্যাপ্রোচ সড়কের অভাবে দপ্তিয়র ইউনিয়নের কয়েক হাজার গ্রামবাসী এবং পার্শ্ববর্তী ধুবড়িয়া এবং সলিমাবাদ ইউনিয়নের মানুষজন তাদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করেন। সড়ক দিয়ে পরিবহন না চলায় মানুষজন কালভার্টতে উঠতে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা চরম ঝুঁকি নিয়ে কালভার্ট পার হচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, তেবাড়িয়া-দপ্তিয়র-কদিম কাটনায় দেড় হাজার মিটার অ্যাপ্রোচ সড়কের সঙ্গে তিনটি বক্স কালভার্ট নির্মাণে দুই কোটি ১৬ লাখ টাকার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন। প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের আগস্ট মাসে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনটি কালভার্ট নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত অ্যাপ্রোচের কাজ শেষ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।

স্থানীয়রা জানান, উন্নয়ন প্রকল্পটি সঠিকভাবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ না করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং এলজিইডির প্রকৌশলীদের অবহেলা রয়েছে। সড়কে কালভার্ট নির্মাণের কাজের সময়ও তারা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং এখনও হচ্ছেন।

ঠিকাদার আনিসুর রহমান বলেন, তিনি সময়মতো তিনটি কালভার্ট নির্মাণ করেন। কিন্তু বন্যা, করোনাভাইরাস এবং লকডাউনের মতো বেশ কয়েকটি পরিস্থিতির কারণে সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেননি।

দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ সিদ্দিক বলেন, দপ্তিয়র, ধুবড়িয়া এবং সলিমাবাদ ইউনিয়নের অধীনে বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার অসম্পূর্ণ নির্মাণ কাজের কারণে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে অনেক কষ্ট ভোগ করছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা এলজিইডি অফিসের ঠিকাদার ও প্রকৌশলীকে অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য অনুরোধ করেছি।

উপজেলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী মাইনুল হক বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য নবনির্মিত কালভার্টগুলোর উদ্বোধন করেন। তবে ঠিকাদার এখনও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি। কালভার্টের অ্যাপ্রোচের কাজ শেষ করতে ঠিকাদারকে বার বার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। শিগগির অ্যাপ্রোচের কাজ শেষ করা হবে।

নাগরপুর এলজিইডির প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এতেও ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো পাত্তা দেয়নি। পরবর্তীতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করার জন্য জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

অভিজিৎ ঘোষ/এসপি